সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণ: বাড়ি ফিরেছেন জীবিত মৎস্যজীবী, দুই মরদেহ উদ্ধারের সম্ভাবনা নেই
সুন্দরবনে বাঘের আক্রমণে নিহত দুই মৎস্যজীবীর মরদেহের সন্ধান এখনো মেলেনি। তবে জীবিত থাকা অপর মৎস্যজীবী বাড়ি ফিরেছেন।
রোববার জানুয়ারি বেলা ১২টার দিকে সীমান্তের মাওন্দি নদী পার হয়ে শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন এলাকা দিয়ে ভারত থেকে বাড়ি ফেরেন তিনি।
ওই মৎস্যজীবী সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী ইউনিয়নের পশ্চিম কৈখালী গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে আবু মুসা (৪১)। অন্যদিকে, নিহত দুই মৎস্যজীবী হলেন একই গ্রামের কফিলউদ্দিনের ছেলে রতন (৪২) ও মনো মিস্ত্রীর ছেলে মিজানুর রহমান (৪০)।
কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, 'বেলা ১২টার দিকে সীমান্তের মাওন্দি নদী দিয়ে মৎস্যজীবী আবু মুসাকে ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছেন এলাকাবাসী। কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন এলাকার পাশ দিয়ে মাওন্দি দিয়ে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা লতিফ, আরিজুল, আরশ খানসহ ৪-৫ জন তাদের একটি নৌকায় তাকে এলাকায় নিয়ে আসেন।'
তিনি আরও বলেন, 'বাঘের আক্রমণে নিহত অপর দুই মৎস্যজীবী রতন ও মিজানুর রহমানের মরদেহের কোনো হদিস এখনো মেলেনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে দুই মৎস্যজীবীর ওপর বাঘ আক্রমণ করে। নৌকায় পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান আবু মুসা। এরপর তিনি কৈখালী সীমান্তের বিপরীতে পুল্লাদ নামে এক ভারতীয়ের কাছে দুদিন আশ্রিত ছিলেন।'
কৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম বলেন, 'বিজিবির সিওর মাধ্যমে ভারতীয় বিএসএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনেক যোগাযোগ করেছিলাম। তবে বাঘের আক্রমণে নিহত দুই মৎস্যজীবীর মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনা তিনদিন গড়িয়েছে; আর সম্ভাবনা নেই- এমনই মনে হচ্ছে। জীবিত থাকা আবু মুসা ভারতীয় যে বাসিন্দার কাছে ছিলেন, তিনি নৌকায় করে আমাদের দেশের মধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছেন।'
এ ব্যাপারে কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা মোবারক আলী ও সীমান্ত এলাকার নীলডুমুর ১৭ বিজিবির সিও ইয়াছিন চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা ফোনকল রিসিভ করেননি।
তবে নীলডুমুর ১৭ বিজিবির সিও ইয়াছিন চৌধুরী আগে জানিয়েছিলেন, 'বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের বিপরীতে ভারতীয় অংশে পাইজুরি খালে (ম্যাপে নেই) দুই মৎস্যজীবী বাঘের আক্রমণে নিহত হন। জীবিত থাকা আবু মুসার মাধ্যমে ঘটনাটি জানা গেছে। মরদেহটি দুটি উদ্ধারের জন্য ভারতীয় বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা উদ্ধারের চেষ্টা করছেন তবে এখনো নিহত মরদেহ দুটির কোনো সন্ধান মেলেনি। স্থানটি দুর্গম হওয়ায় উদ্ধার কাজ অসম্ভব হয়ে পড়েছে।'