সুর চৌধুরী ও শাহ আলমের ব্যাংক একাউন্টের তথ্য চেয়েছে বিএফআইইউ
ঘুষ কেলেঙ্কারিতে আলোচিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী ও বর্তমান নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমসহ তাদের স্বজনদের ব্যাংক একাউন্টের তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ফিনানসিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সুর চৌধুরী ও তার স্ত্রী সুপর্না চৌধুরী এবং শাহ আলম ও তার দুই স্ত্রী শাহীন আক্তার শেলী এবং নাসরিন বেগম এর ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চেয়ে সবগুলো ব্যাংকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে তাদের লেনদেনসহ একাউন্টের যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।
চিঠি পাওয়ার বিষয়টি একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশ না করে তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, কয়েকদিন আগে এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক একাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য দিবেন।
এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গোয়েন্দা সেল থেকেও সুর চৌধুরী ও শাহ আলমের ব্যাংক একাউন্টের তথ্য চেয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে চিঠি দেয়া হয়েছিল। তাদের দুই জনের বিদেশ যাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
পিকে হালদারের নিয়ন্ত্রণাধীন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশিদুল ইসলামের আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সুর চৌধুরী ও শাহ আলমের ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে আসে।
রাশিদুল ইসলাম জবানবন্দিতে জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম ঢেকে রাখার জন্য সুর চৌধুরী ও শাহ আলম ছাড়াও পরিদর্শন কর্মকর্তাদের পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে ঘুষ দেয়া হতো।
এমন অভিযোগের সত্যতা খুঁজে দেখা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি অনিয়ম তদন্ত করতে গেল মাসে ডেপুটি গভর্নর এ কে এম সাজেদুর রহমান খানকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সুর চৌধুরী ডেপুটি গভর্নরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে এক মেয়াদের পর উপদেষ্টা হিসেবে তার মেয়াদ আর বাড়ানো হয়নি।
অন্যদিকে নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমকে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে এই শাস্তি যথেষ্ট নয় বলে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপকেরা। সম্প্রতি ডেপুটি গভর্নর কাজী সাইদুর রহমানের সাথে এক বৈঠকে তারা (মহাব্যবস্থাপক) এই অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের অনিয়মের গন্ধ পেলেই তাকে (ডেপুটি গভর্নর) আনুষ্ঠানিক কিংবা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানাতে, ওই বৈঠকে মহাব্যবস্থাপকদের অনুরোধ করেছেন সাইদুর রহমান।