স্বাভাবিক পানিপ্রবাহে একতরফা বাধা দেওয়ায় প্লাবিত হচ্ছে শ্যামপুর শিল্পাঞ্চল: মেয়র তাপস
পানির স্বাভাবিক প্রবাহে একতরফাভাবে বাধা দেওয়ায় পুরো শ্যামপুর শিল্পাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে, বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
সাপ্তাহিক নিয়মিত পরিদর্শন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ বুধবার (২০ অক্টোবর) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন শ্যামপুর শিল্পাঞ্চল পরিদর্শন করেন। পরে ডিএসসিসি মেয়র মতিঝিলে অন্তবর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের উদ্বোধন এবং পান্থকুঞ্জ পার্ক পরিদর্শন করেন।
পান্থকুঞ্জ পার্ক পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র তাপস এ মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, 'আমরা প্রথম দিন থেকে বলছি, সংস্থাগুলো যখনই কোনো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করে, তারা যেন প্রকল্প প্রণয়নের পর্যায়েই আমাদের সাথে সমন্বয় করে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি, প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে গিয়ে আমাদের ওপর বিভিন্নভাবে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আপনারা জানেন, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ সড়ক প্রকল্পের একতরফা কিছু কার্যক্রমের কারণে শ্যামপুর শিল্পাঞ্চলের স্বাভাবিক জলপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে শ্যামপুর শিল্পাঞ্চলের পুরোটাই প্লাবিত হয়ে গেছে।'
তিনি আরো বলেন, 'রেলমন্ত্রী আজ সরেজমিন পরিদর্শন করে সমস্যাটি বুঝতে পেরেছেন। আমরা পুরো জায়গাটি হেঁটে হেঁটে দেখেছি। শ্যামপুর শিল্পাঞ্চলের পানি প্রবাহের যে সুযোগ সেটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিক যে জলপ্রবাহ ছিল, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ছিল -- সেটা একতরফাভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে রেলমন্ত্রী সময় দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি সমন্বয় করব এবং অত্র-অঞ্চলের সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানে আমরা আসতে পারব বলে আশা করছি।'
এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে প্রকল্পের জন্য পান্থকুঞ্জ পার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, 'পান্থকুঞ্জ পার্কের উন্নয়নে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। কিন্তু এখান দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের একটি লাইন যাওয়ার কথা। সেজন্য দীর্ঘদিন ধরে আমাদের প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, তারা যেভাবে পরিকল্পনা নিয়েছে তাতে পার্কের বড় একটি অংশ চলে যাবে। কিন্তু উন্মুক্ত জায়গা, পার্ক এগুলো সংরক্ষণ করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। এই এলাকার জনগোষ্ঠীর জন্য এখানে কোন উন্মুক্ত স্থান নেই, সেজন্য এই পার্কটি এখানকার জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই পার্কটিকে সংরক্ষণ করে নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। যাতে করে পার্কটির সুফল এলাকাবাসী ভোগ করতে পারে। আমরা প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে বলেছি, প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে পার্কের স্বল্প পরিমাণ জায়গা নিতে হবে। জমি অধিগ্রহণ করলে সেটার মূল্য দিতে হবে। পার্কের পরিবেশ বজায় রেখে তাদের প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে।'
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা-৪ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিনসহ সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডসমূহের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলরবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।