লোডশেডিং আর বিদ্যুতের এই সংকট বেশিদিন থাকবে না: নসরুল হামিদ
গ্যাস ও জ্বালানি সংকটের কারণে সৃষ্ট চলমান লোডশেডিং পরিস্থিতি বেশিদিন থাকবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, "এবছরের মধ্যেই পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ভারত থেকে ১৬০০ মেগাওয়াট আমদানিকৃত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে।"
গ্যাস ও বিদ্যুতের ব্যবহারে সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী লেখেন, "গত দুই বছরের বেশি সময় ধরে বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর প্রভাব সব জায়গাতে পড়েছে। কোভিড-১৯ এর ধাক্কা যখন সবাই কাটিয়ে উঠছিল তখনই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি সারা বিশ্বকেই গভীর এক সংকটে ফেলেছে। এই সংকট শুধু উন্নয়নশীল দেশেই না অনেক উন্নত দেশেও এর আঁচ লেগেছে। যুদ্ধের প্রভাবে জ্বালানি মার্কেট চরম অস্থিতিশীল করে তুলেছে। আন্তর্জাতিক খাদ্যপণ্যের বাজারও বেসামাল। বৈশ্বিক এই সংকট আমাদেরকেও বিপদে ফেলে দিয়েছে।"
তিনি উল্লেখ করেন, "আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১৬০০-১৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন। সেখানে আমরা দিতে পারছি মাত্র ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।"
"এর বেশি গ্যাস আমরা দিতে পারছিনা কারণ আমাদের অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে কৃষি ও শিল্পখাতকে। কৃষির জন্য সার অপরিহার্য। সার উৎপাদনেও আমাদেরকেও অনেক পরিমাণ গ্যাস দিতে হচ্ছে।"
নসরুল হামিদ তার বিবৃতিতে লিখেছেন, "আমাদের বর্তমানে দৈনিক গ্যাসের উৎপাদন ২৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট। চাহিদার বাকি বৃহৎ অংশ এলএনজি আমদানি করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।"
"কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন কমতে শুরু করেছে আমাদের খনিগুলোর রির্জাভ কমে যাওয়ার কারণে", যোগ করেন মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) জানিয়েছে, গত সোমবার সারা দেশে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হয়েছে।
গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন, যেখানে সেদিন সরবরাহ ছিল মাত্র ৮৮২.৫২ মিলিয়ন ঘনফুট।
এদিকে, বিশ্বের অন্যান্য দেশে অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম।
টেক্সাসে একটি তরল প্রাকৃতিক গ্যাস ফ্যাসিলিটি সাময়িকভাবে বন্ধ হওয়ার পর থেকে ইউরোপ এবং এশিয়ায় গ্যাসের দাম কয়েক সপ্তাহে ৬০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
মূলত, গত বছরের শুরু থেকেই বেড়েছে গ্যাসের দাম। ইউরোপে এই দাম বেড়েছে ৭০০ শতাংশ পর্যন্ত।
জার্মানিও বলেছে, অচিরেই বিদ্যুৎ ফুরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার মুখোমুখি ইউরোপ।
এরমধ্যে নতুন খবর হলো, জার্মানিতে রাশিয়ান গ্যাস বহনকারী প্রধান নর্ড স্ট্রীম পাইপলাইনটি ১১ জুলাই থেকে ১০ দিনের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের কাজে বন্ধ করা হবে। মস্কো এই পাইপলাইন আবার নাও খুলতে পারে, এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে এখন।