যে কারণে বিখ্যাত রাজবাড়ীর ক্ষীর চমচম
মিষ্টিপ্রেমীদের পছন্দের তালিকায় থাকা একটি অন্যতম খাবার চমচম। রকমভেদে এই চমচম দেশের একেক অঞ্চলে একেকভাবে বানানো হয়। এমনই একটি রাজবাড়ীর ক্ষীর চমচম, যার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে জেলাসহ দেশ ও দেশের বাইরে।
চমচম মিষ্টি সাধারণত একটু রসালো হয়। এর ওপরে খাঁটি দুধের ছানার তৈরি মাওয়ার শুকনো গুড়া (ক্ষীর) প্রলেপ দিয়ে তৈরি করা হয় ক্ষীর চমচম।
রাজবাড়ী জেলা শহরে বহু মিষ্টির দোকান থাকলেও হাতে গোনা কয়েকটি দোকানের চমচম বেশি জনপ্রিয়। এরমধ্যে ভাদু সাহ ও শংকর সাহ এর চমচম সর্বত্র পরিচিত।
এছাড়া মিষ্টি বাড়ি, হোসেন মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, বানিবহ দধি ভাণ্ডারসহ কয়েকটি দোকানের ক্ষীর চমচম বেশ জনপ্রিয়। জনপ্রিয় এই মিষ্টি যেমন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া অনেকেই এটি কম দামে কিনে ঢাকায় এনে বেশি দামে বিক্রি করেন।
এই চমচম বানাতে প্রথমে খামারীদের থেকে গরুর দুধ সংগ্রহ করেন মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ সময় ধরে এই দুধ জ্বাল দিয়ে ছানায় রুপান্তর করা হয়। পরে সেটাকে চমচমের রূপ দিয়ে মিষ্টির রসের মধ্যে ভিজিয়ে রাখা হয়। পরবর্তী ধাপে ছানা দিয়ে তৈরি নরম মাওয়াকে শক্ত মাওয়ায় পরিণত করা হয়। এই মাওয়া ভেঙে চালনি দিয়ে চেলে গুঁড়া (ক্ষীর) বানিয়ে চমচমের ওপরে প্রলেপ দিয়ে বানানো হয় ক্ষীর চমচম।
বর্তমানে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে রাজবাড়ীর ক্ষীর চমচম। তবে উৎসব পার্বণে দাম আরো বেড়ে যায়।
চমচমের পাশাপাশি রাজবাড়ীতে প্যারা সন্দেশ, বর্ফি, কাটারীভোগ, রসগোল্লা, রসমালাই, কালোজাম, স্পঞ্জ সহ বিভিন্ন পদের মিষ্টি তৈরি হয়।
চমচম ক্রেতা রবিউল আওয়াল বলেন, "ঢাকার বনফুল, বনলতার চেয়ে রাজবাড়ীর চমচম ভাল ও সুস্বাধু। যার কারণে চমচম কিনতে অনেকেই এখানে আসেন।"
আরেক ক্রেতা সমীর কুমার দাস বলেন, "রাজবাড়ীর চমচমের দেশ ও দেশের বাইরে সুনাম আছে। দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও তেমন সুস্বাদু। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে গেলে, ঢাকায় অফিসে গেলে, এমনকি ভারতে গেলেও আমি রাজবাড়ীর ক্ষীর চমচম নিয়ে যাই।"
মিষ্টি বাড়ীর গৌড় ঘোষ, হোসেন মিষ্টান্ন ভান্ডারের নূরে আলম সিদ্দিকী ও বানিবহ দধি ভান্ডারের লিটন ঘোষ জানালেন, সুস্বাদু হওয়ায় রাজবাড়ীর ক্ষীর চমচম ভারত, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে নিয়ে যায় অনেকে।