চট্টগ্রামে পুকুর ভরাটের মামলায় আটক ২ শ্রমিক
আইন অমান্য করে চট্টগ্রামের হালিশহরের একটি পুকুর ভরাটের ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলার পর দুজন শ্রমিককে আটক করা হয়েছে। তবে যাদের নির্দেশে শ্রমিক দুজন কাজ করছিলেন তাদেরকে এখনো আটক করা হয়নি।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের পরিদর্শক মো. মনির হোসেন বাদি হয়ে হালিশহর থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে একই দিন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায় এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। খবর প্রকাশের পর পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পায়।
মামলায় ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরটির একাংশের মালিক দুই ভাই মো. জনি (৩৫), মোহাম্মদ জিসান (৩০) এবং ভরাটের কাজে নিয়োজিত দুই শ্রমিক মো. আকরাম (৩৮) ও মো. সোহাগকে (৩২) আসামি করা হয়। এদের মধ্যে দুই শ্রমিককে পরিবেশ অধিদপ্তর আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. মনির হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "গত এক মাসে পুকুরটি প্রায় ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ৪ হাজার বর্গফুট ভরাট করা হয়েছে। আমার জেনেছি, মালিক জনি ও জিসানের নির্দেশে পুকুর ভরাটের কাজ চলছিল। অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।"
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত-২০১০) এর ৬(ঙ) অনুযায়ী, জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ছাড়া কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধা সরকারি এমনকি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের বা ব্যাক্তিমালিকানাধীন পুকুর ভরাট করা যাবে না। একই আইনের ১৫(১) ধারা অনুযায়ী এটি দণ্ডনীয় এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এসব ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও মনির হোসেন জানান।
হালিশহর থানার ডিউটি অফিসার পুলিশ উপ-পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, দুজনকে আটক করা হয়েছে। মামলাটি এখনো প্রক্রিয়াধীন। এরপর যাচাই-বাছাই করে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্থানীয়রা জানান, আগ্রাবাদ এক্সেস রোডের সমবায় সিঙ্গাপুর মার্কেটের পেছনে 'সরকার বাড়ি পুকুর' নামে পুকুরটি ওপর স্থানীয় নিম্ন আয়ের ৫ শতাধিক পরিবার নির্ভরশীল।
গত চার দশকে চট্টগ্রামে ২৪ হাজার পুকুর ও জলাশয় বিলীন হয়ে গেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের ১৯৮১ সালের পরিসংখ্যান বলছে, চট্টগ্রামে প্রায় ২৫ হাজার পুকুর ও জলাশয় ছিল।
তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মোরশেদ হোসেন মোল্লার 'চট্টগ্রাম মেট্রোপলিসের জলাভূমিতে স্থানিক ও অস্থায়ী পরিবর্তন' নামে একটি গবেষণার তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে শহরটিতে জলাশয় ছিল মাত্র ১,২৪৯টি ।