১৪৫ টাকা প্রত্যাখ্যান, চলবে আন্দোলন
৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে সারাদেশের ১৬৭টি চা বাগানের শ্রমিকরা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমিকদের সঙ্গে সমঝোতা করতে শনিবার (২০ আগস্ট) বিকালে তৃতীয় দফায় শ্রীমঙ্গলের শ্রম দপ্তরে শ্রমিক প্রতিনিধিদের সাথে সরকার পক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের পর ২৫ টাকা বাড়িয়ে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা নির্ধারিত হয়। এরপর ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল।
তবে, এর কিছু সময় পরেই বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-ধলই ভ্যালি কমিটির সভাপতি ধনা বাউরী ও চা ছাত্র যুবনেতা মোহন রবিদাসের নেতৃত্বে শ্রমিকদের একটি পক্ষ এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় তারা বলেন, শনিবার সভা শুরুর আগে থেকেই পুলিশ তাদের ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। পরে পুলিশ তাদের টর্চার করেছে। চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পালকে দিয়ে ১৪৫ টাকা মজুরি মেনে ধর্মঘট স্থগিতের ঘোষণা দেওয়ানো হয়। এই সিদ্ধান্ত তারা মানবেন না। ৩০০ টাকা মজুরি নির্ধারিত না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।
চা শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আজ বৈঠকে চা শ্রমিকদের যে নেতারা বসেছিলেন, তাদেরকে জোর করে ১৪৫ টাকা মজুরির ব্যাপারে রাজি করানো হয় এবং আন্দোলন বন্ধের ঘোষণা দেওয়ানো হয়।
শনিবার বৈঠকে বিভাগীয় শ্রম দপ্তর কার্যালয়ে বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদসহ মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি এবং চা শ্রমিকদের পক্ষে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে বিকাল ৩টা পর্যন্ত টানা ৮ম দিনের মতো ৩০০ টাকা মজুরিসহ বিভিন্ন দাবিতে চা শ্রমিকরা ধর্মঘট পালন করেন।
প্রসঙ্গত, দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে কাজ বন্ধ রেখে আন্দোলন করছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। গত আট দিনে সরকার ও মালিকপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠকে বসেও মজুরি নিয়ে কোনো সমাধান না হওয়ায় চা শ্রমিকরা নিজ নিজ এলাকায় সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ, মিছিল করে যাচ্ছেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দাবি আদায়ে অষ্টম দিনের মতো ধর্মঘট করছিলেন দেশের সব চা-বাগানের শ্রমিকরা। ধর্মঘটের ৮ম দিন আবারও চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সরকার।