ভারী অস্ত্র নিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে টহল দিচ্ছে মিয়ানমারের সৈন্যরা
বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে কাঁটাতারের বেড়া ঘিরে ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে টহল দিচ্ছে মিয়ানমারের সেনারা।
রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমারের সৈন্যদেরকে ভারী অস্ত্রসহ সীমান্তের কাছে বাঙ্কারে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
ঘুমধুম কোনারপাড়া সীমান্তের জিরো পয়েন্ট বেড়ার চারপাশে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সৈন্যদের দলে দলে টহল দিতে দেখা যাওয়ায় ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের স্থানীয় লোকজনসহ জিরো পয়েন্টে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় এক রোহিঙ্গা বাসিন্দা বলেন, "জিরো পয়েন্টের কাছে প্রায় সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে। আমরা কেউই শান্তিতে নেই। ভয়ে আমাদের দিন কাটছে।"
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমান্তের ৩৩-২ নম্বর পিলারের বিপরীতে একটি বাঙ্কার দেখা যায়; যেখানে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবস্থান করছিলেন সৈন্যরা।
অন্য একজন স্থানীয় বলেন, "মিয়ানমারের সৈন্যরা এখন বেশি বেশি গুলি চালাচ্ছে। আমরা ভয়ে আছি। সীমান্তে সেনা সদস্যের সংখ্যাও বেড়েছে। দিনরাত টহল দিচ্ছে তারা। রোববারও অস্ত্র হাতে শত শত সেনা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে টহল দিয়েছে। দিন নেই রাত নেই, নিজেদের ইচ্ছামতো যেকোনো সময় গুলি করে তারা।"
স্থানীয়রা জানান, মিয়ানমারের সেনারা বেশ কিছুদিন ধরে সীমান্তে হেলিকপ্টার থেকে গোলাবর্ষণ ও গুলি চালাচ্ছে।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে ৪০ ও ৪১ নম্বর সীমান্ত চৌকির মধ্যে মিয়ানমার থেকে দুটি মর্টার শেল বাংলাদেশের সীমান্তে এসে পড়ে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় এ তথ্য।
একই দিনে, মিয়ানমারের অন্তত চারটি যুদ্ধবিমানও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উপর দিয়ে বাংলাদেশের আকাশসীমা অতিক্রম করেছে বলে জানা গেছে।
৩০ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের পাহাড়ে একাধিক গোলা নিক্ষেপ করে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমার উইংয়ের মহাপরিচালক মিয়া মইনুল কবিরের সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূতকে আরও বলা হয় , এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের শান্তিকামী জনগণের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সীমান্ত চুক্তি লঙ্ঘন এবং সুপ্রতিবেশী সম্পর্কের পরিপন্থী।
রাখাইন থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের বাসিন্দাদের কোনো অনুপ্রবেশ যাতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতেও বলা হয় রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে।