টঙ্গী নদীবন্দর থেকে ঢাকা বৃত্তাকার নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিস চালু
পাঁচটি দ্রুতগামী স্পিডডবোট দিয়ে শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) টঙ্গী নদী বন্দর হতে ঢাকা বৃত্তাকার নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
বেসরকারি উদ্যোগে প্রথম পর্যায়ে টঙ্গী/আব্দুল্লাহপুর-কড্ডা এবং টঙ্গী/আব্দুল্লাহপুর (গাজীপুর)-উলুখুল (কালীগঞ্জ), এই দুইটি রুটে স্পিডবোট চলাচল করবে।
টঙ্গী/আব্দুল্লাহপুর-কড্ডা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা; গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লাগবে ২৫ মিনিট এবং টঙ্গী/আব্দুল্লাহপুর (গাজীপুর)-উলুখুল (কালীগঞ্জ) পর্যন্ত ভাড়া ১২০ টাকা; সময় লাগবে ১৯ মিনিট।
পর্যায়ক্রমে যাত্রী চাহিদার ওপর ভিত্তি করে কড্ডা-গাবতলী এবং গাবতলী-সদরঘাট এই দুইটি নৌরুটে স্পিডবোট চালু করা হবে।
নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এম.পি এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি শনিবার টঙ্গী নদী বন্দরে টঙ্গী নদী বন্দর হতে ঢাকা বৃত্তাকার নৌপথে স্পিডবোট সার্ভিসের উদ্বোধন করেন।
এর আগে, প্রতিমন্ত্রীদ্বয় টঙ্গী নদী বন্দরে বিআইডব্লিউটি-এর ইকোপার্ক উদ্বোধন করেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "নদী রক্ষা করতে না পারলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।"
শিল্প কারখানার মালিকদের উদ্দেশ্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আপনারা নিজস্ব বর্জ্য প্লান সচল রাখুন। নদীতে ময়লা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করবেন না।"
"বিশ্বের মুসলমানদের ধর্মীয় জামাত বিশ্ব ইজতেমা টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে হয়। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে পরিচিত করা হচ্ছে। সারাবিশ্বের থেকে মুসলমানরা এই জমায়েতে শরীক হয় মুসলিম উম্মার সাফল্য কামনায় দোয়া করেন। কিন্তু আমরা তাদের বিশুদ্ধ (পবিত্র ) পানি উপহার দিতে পারি না। সবাই সচেতন হব এবং নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলব না," যোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার দেশে ১০ হাজার নৌপথের মধ্যে ৭ হাজার সচল করা হয়েছে।
এর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর হত্যার নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে আগামী ১৬ থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কমিশন গঠন হবে বলে ঘোষণা করেন আইনমন্ত্রী। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, কতিপয় অসাধু মানুষের অতি-মুনাফার আশায় আজ নদীগুলো মৃত। বর্জ্য ফেলায় সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান জানান তিনি।
ঢাকা শহরের চারিদিকে বৃত্তাকার নৌপথ চালু করে সড়কপথে যানবাহনের চাপ কমানো এবং নৌপথে সাশ্রয়ীমূল্যে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে, কয়েকটি ধাপে ঢাকার চারটি নদীর ১১০ কিলোমিটার নৌপথে নৌযান পরিচালনার পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
টঙ্গী ইকোপার্ক উদ্বোধন
১১ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত টঙ্গী ইকোপার্ক উদ্বোধন করা হয়েছে শনিবার।
টঙ্গী ইকোপার্ক নির্মাণ কাজটি ৮ নভেম্বর, ২০২০ শুরু হয়ে ১৫ এপ্রিল ২০২২ তারিখে সম্পন্ন হয়েছে। টঙ্গী নদী বন্দর এলাকায় ৩.০ একর অধিগ্রহণকৃত ভূমির মধ্যে ২.৫ একর ভূমিতে ইকোপার্কটি নির্মিত হয়। ইকোপার্কটি নির্মাণের ফলে এই এলাকার সর্বস্তরের জনগণের কাঙ্খিত বিনোদনসহ দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে পরিবার পরিজন নিয়ে অবসর সময় কাটাতে সহায়তা করবে।
তাছাড়া নদীর তীরভূমি দখলরোধ করে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।
ইকোপার্কে ফলজ, বনজ ও ঔষধিসহ প্রায় ১০ হাজার গাছের চারা রোপন করা হয়েছে। যা প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখবে। এখানে পাঁচতলা বিশিষ্ট একটি ওয়াচ টাওয়ার, ছয়টি চাইল্ড রাইড এবং একটি ঝরনা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ঢাকা শহরের চারিদিকে নৌপথ উন্নয়ন, সংরক্ষণ, সৌন্দর্যবর্ধন ও চালুকরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।