বিভাগীয় শহরগুলোতে জিপির ফাইভ-জি ট্রায়াল পরিচালনা
ডিজিটাল কানেকটিভিটিকে উচ্চতর স্তরে নিয়ে যেতে দেশের সব বিভাগীয় শহরে ফাইভজি ট্রায়াল পরিচালনা শুরু করেছে গ্রামীণফোন (জিপি)।
বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গ্রামীণফোনের টেস্ট রান উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার।
হুয়াওয়েই এবং জেটিই টেকনোলজির সহায়তায় গ্রামীণফোন পরীক্ষামূলকভাবে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সচল করেছে।
এর আগে, গত ২৬ জুলাই শুধু ঢাকা এবং চট্টগ্রামে ফাইভ-জি ট্রায়াল হয়েছিল।
ফাইভ-জি ট্রায়ালে সিলেট এবং খুলনায় ৬০০ এমবিপিএস ইন্টারনেট স্পিড পাওয়া গেছে, যা ফোর-জি এর তুলনায় ১০ গুণ বেশি। ঢাকায় ইন্টারনেটের গতি রেকর্ড করা হয় ১০০০ এমবিপিএস; এই গতি পেয়ে গ্রামীণফোনের কর্মকর্তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
গত বছরের ১২ ডিসেম্বর রাষ্ট্রায়ত্ত্ব মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটক প্রথম পরীক্ষামূলকভাবে দেশের ছয়টি স্থানে ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু করে।
তবে রবি আজিয়াটা লিমিটেড প্রথম টেলিকম কোম্পানি যারা ২০১৮ সালে দেশে ফাইভ-জি ট্রায়াল পরিচালনা করেছিল।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, 'প্রযুক্তির শক্তিকে গণতান্ত্রিকায়নের মাধ্যমে সমাজের ক্ষমতায়ন এবং সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টিই গ্রামীণফোনের মূল। আসন্ন ফোরআইআর-এর সাথে, আমরা বিশ্বাস করি চলমান ডিজিটালাইজেশনকে ত্বরান্বিত করা এবং জাতিকে 'স্মার্ট বাংলাদেশ' হওয়ার স্বপ্ন অর্জনের পথে এগিয়ে নেয়া আমাদের দায়িত্ব।'
টু-জি, থ্রি-জি ও ফোর-জি থেকে এখন ফাইভ-জি কানেক্টিভিটি যুগেও উচ্চ গতি এবং উন্নত ইন্ডাস্ট্রিয়াল সলিউশন নিয়ে গ্রামীণফোন দেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে কাজ করছে বলে ইয়াসির আজমান উল্লেখ করেন।
এর আগে মার্চ মাসে ফাইভ-জি নেটওয়ার্কের জন্য গ্রামীণফোন ২.৬ গিগাহার্টজ ব্যান্ড থেকে ৩,৩৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ মেগাহার্টজ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি কিনে। বর্তমানে গ্রামীণফোন ১০৭.৪ মেগাহার্টজ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
ইয়াসির আজমান বলেন, 'আমরা ৩-জি থেকে ৪-জি যত সহজে শুরু করেছি সেখানে ৫-জি শুরু করা এতো সহজ না। কারণ এখানে প্রযুক্তি সম্প্রসারণের বিষয় রয়েছে। তবে আমরা এই সম্প্রসারণের কাজগুলো করতে প্রস্তুত রয়েছি।'
তিনি আরো বলেন, 'আমাদের নেটওয়ার্কে অনেক সমস্যা রয়েছে। সেগুলো সমাধান করা আমাদের কর্তব্য। আমরা সবসময় চাই গ্রাহককে ভাল সেবা দিতে।'
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি বাড়ানোর ক্ষেত্রে ফাইভ-জি আরও কার্যকর হবে।
বর্তমানে বিশ্বের ৬০টি দেশ ফাইভ-জি'র টেস্ট ট্রায়ালে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সফলভাবে ফাইভ-জি চালু হলে বাংলাদেশ এই বিপ্লবে প্রথম সারিতে থাকবে।
তিনি বলেন, 'আমাদের এখানে ফোর-জি নেটওয়ার্কের অবস্থা খুবই খারাপ। এই নিয়ে মানুষ আমাদের দিকেই অভিযোগের আঙ্গুল তোলে। তাই অপারেটররা যে সেবাই দিক না কেন, সেটা নিয়ে যাতে গ্রাহকের অভিযোগ না থাকে। আর এজন্য আমাদের সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।'
গ্রামীণফোনের নতুন সিম বিক্রি বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটির পাঠানো প্রতিবেদন থেকেই বিটিআরসি বিভিন্ন সমস্যা খুঁজে পেয়েছে। আর এই কারণেই তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহারে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে।
'তারা সমাধান করে প্রতিবেদন দিলে আমরা যাচাই করে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেব', বলেন তিনি।