রোগীকে অন্য ইউনিটে পাঠানোয় নারী ইন্টার্নকে ডাক্তারের পা ধরে ক্ষমা চাওয়ানোর অভিযোগ
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগের এক সহকারী অধ্যাপকের চেম্বার থেকে পাঠানো রোগীকে মেডিসিন ইউনিটে ভর্তি না করে সার্জারি ইউনিটে রেফার করায় এক নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত সহকারী অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান খোকনকে অপসরণের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। আল্টিমেটাম মানা না হলে আগামীকাল (সোমবার) সকাল ১০টার পর কর্মবিরতিতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সভাপতি হৃদয় রঞ্জন নাথ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'কিছুদিন আগে আমাদের এক ইন্টার্ন সহকর্মীকে মেডিসিন অনুষদের এক চিকিৎসক পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেছেন। এটি একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমাদের একটাই দাবি—এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও ওই চিকিৎসকের আমাদের মেডিকেল কলেজ থেকে অপসরণ।'
হৃদয় বলেন, 'ওই রোগী ডায়াবেটিক ফুটে আক্রান্ত। সাধারণত এ ধরনের রোগীদের আমরা সার্জারি ডিপার্টমেন্টে পাঠাই। সে কারণে ওই ইন্টার্ন চিকিৎসক ওই রোগীকে সার্জারি ডিপার্টমেন্টে ভর্তির জন্য পাঠান।
'দুঃখজনক বিষয় হলো, ইন্টার্ন চিকিৎসকের এই সিদ্ধান্ত জেনে মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ওই ইন্টার্নকে পরদিন অফিসে ডেকে অন্যান্য অধ্যাপক, সিএ, রেজিস্টার, ট্রেইনি ডাক্তারদের সামনে পা ধরে মাফ চাইতে বাধ্য করেন। মেয়েটি স্যরি বললেও তিনি তাকে পা ধরে মাফ চাইতে বাধ্য করেছেন।'
আগামী মাসে ওই নারী ইন্টার্নের ইন্টার্নশিপ শেষ হবে। এই ঘটনার পর থেকে ওই নারী ইন্টার্ন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলে জানিয়েছেন হৃদয়।
এদিকে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. কামরুজ্জামান খোকন টিবিএসকে বলেন, তিনি ইন্টার্ন চিকিৎসককে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বলেননি এবং পা ধরতেও দেননি। গত ১৩-১৪ দিন আগে ডায়বেটিস ফুটে আক্রান্ত তার চেম্বারের এক রোগীর আনকন্ট্রোলড ডায়বেটিস থাকায় তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠান। রোগীকে ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ভর্তি লিখে দিয়ে ওয়ার্ডে পাঠান। ওয়ার্ডে চিকিৎসকেরা তাকে ভর্তি না নিয়ে চিকিৎসা লিখে দেন। নিয়ম অনুযায়ী রোগীকে ভর্তি করার কথা।
ডা. খোকন আরও বলেন, রোগী এ বিষয়টি জানালে পরদিন তিনি মেডিসিন বিভাগের প্রধানকে জানালে ওই ওয়ার্ডের ইউনিট প্রধানকে ডেকে পাঠান বিভাগীয় প্রধান। ইউনিট প্রধান জানান, ইন্টার্ন চিকিৎসক এ কাজটি করেছেন। বিভাগীয় প্রধান ইন্টার্ন চিকিৎসককে ডা. খোকনের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বলেন। তবে ডা. খোকনের দাবি ইন্টার্ন চিকিৎসককে তিনি পা ধরতে দেননি।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন টিবিএসকে বলেন, 'ইন্টার্নদের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দুই-একদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।