চট্টগ্রামে এনআইডি জালিয়াতি: ইসির ৫ ডাটা এন্ট্রি অপারেটরসহ গ্রেপ্তার ১০
চট্টগ্রামে জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের পাঁচ ডাটা এন্ট্রি অপারেটরসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (বন্দর ও পশ্চিম) মোহাম্মদ আলী হোসেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নির্বাচন কমিশনের চুক্তিবদ্ধ ডাটা এন্ট্রি অপরাটের মো. নুর নবী ওরফে রাহাত (২৫), মো. মিজানুর রহমান (২৩), ফরহাদুল ইসলাম (২৮), ইমন দাশ (২০), মো. কামাল (৪২) এবং মো. কামাল হোসেন ওরফে মোহাম্মদ (৪৫), পারভীন আক্তার (২৫), মো. নুরুল আবছার (২৮), শামসুর রহমান ওরফে শামসু মাস্টার (৬০), মো. ইয়াছিন আরাফাত (২২)।
এদের মধ্যে দুইজন- মো. কামাল হোসেন ও পারভীন আক্তার মিয়ানমারের নাগরিক। শামসুর রহমান কক্সবাজারের পোকখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ছিলেন। রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তৈরির কাজে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তিনি চাকরিচ্যুত হন। রোহিঙ্গাদের এনআইডি কার্ড তৈরিতে যুক্ত থাকায় তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ কক্সবাজার সদর থানায় মামলা দায়ের করেছিল।
উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আলী হোসেন জানান, আসামি শামসু মাস্টার কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের সংগ্রহ করে আসামি নুরুল আবছারের কাছে পাঠাতো। পরে নুরুল আবছার ওই রোহিঙ্গাদের জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে দিতো। এই কাজে তাকে সহায়তা করতো নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ৫ জন ডাটা এন্ট্রি অপরাটের।
এই চক্রটি দীর্ঘদিন বিভিন্ন প্রকার জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এনআইডিসহ বিভিন্ন প্রকার ডকুমেন্ট তৈরি করে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল।
তিনি বলেন, 'গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হালিশহর হাউজিং এস্টেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গাদের এনআইডি তৈরি চক্রের এই ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের এনআইডি কার্ড তৈরির ফরম-২ এবং জন্মনিবন্ধন ফরম উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। এ চক্রের আরও অনেক সদস্য আছে যাদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।'
এর আগে ২০১৯ সালে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে লাকী আক্তার নামের এক রোহিঙ্গা নারী ভুয়া এনআইডি সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাসপোর্ট নিতে গিয়ে ধরা পড়ার পর জালিয়াত চক্রের খোঁজে নামে নির্বাচন কমিশন। সে সময় রোহিঙ্গা সন্দেহে অর্ধশত এনআইডি বিতরণ আটকে দেয় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগ।
তখন এনআইডি জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন ও তিন ডেটা এন্ট্রি অপারেটরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।