৪ বছরে কোটিপতি হিরো আলম: মোটরসাইকেল থেকে প্রাইভেটকার, সঞ্চয়পত্রে ৫৫ লাখ!
বগুড়ার উপনির্বাচনে মনোনয়ন উত্তোলনকারী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম চার বছরের ব্যবধানে কোটিপতি হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া তার হলফনামা বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
তবে হিরো আলমের পক্ষ থেকে সম্পদের এ বৃদ্ধির বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। তার দাবি, হলফনামা পূরণ করতে গিয়ে তার আইনজীবী ভুল করে থাকতে পারেন।
'হলফনামা জমা দেওয়ার শেষ সময়ে তাড়াহুড়ো করার কারণে এমন ভুল হয়েছে। আমার উকিল হলফনামায় এমন ভুল তথ্য দিয়েছেন', তিনি বলেন।
বিএনপি'র দলীয় এমপিদের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে হিরো আলম মনোনয়নপত্র জমা দেন। দাখিলকৃত ১ শতাংশ ভোটার তালিকায় গড়মিল থাকায় গত ৮ জানুয়ারি তার মনোনয়ন বাতিল করেন করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম।
হলফনামায় হিরো আলমের নিজ নামে কৃষি জমি থেকে আয় দেখানো হয়েছে ৬,০০০ টাকা। পেশা ব্যবসায় উল্লেখ করে সেখান থেকে আয় দুই লাখ ৫২ হাজার টাকা দেখিয়েছেন তিনি।
এছাড়া আসবাবপত্র, ইলেকট্রনিক্স পণ্যে উভয় খাতে এক লাখ টাকা সমমূল্যের সম্পদ দেখিয়েছেন তিনি। স্ত্রী-পরিবারের নামে ৫৫ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র ও ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের কথাও উল্লেখ করেন হলফনামায়।
হলফনামা থেকে জানা গেছে, সম্প্রতি ক্রয় করা ১৬ লাখ টাকা মূল্যের একটি ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন হিরো আলম। সব মিলিয়ে হিরো আলমের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির বর্তমান আর্থিক মূল্য কোটি টাকার বেশি।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছিলেন হিরো আলম। ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র ও হলফনামায় কৃষি জমি থেকে ৬ হাজার ও ব্যবসায় থেকে দুই লাখ ৫২ হাজার টাকা আয় দেখান তিনি।
সে সময় ব্যাংকে তার ১০০০ টাকা ছিল। এছাড়া হলফনামায় ৮৭ হাজার টাকা মূল্যের মোটরসাইকেল, ২০ হাজার টাকা মূল্যমানের এক ভরি স্বর্ণ, এক লাখ টাকার ইলেকট্রনিক্স পন্য, দেড় লাখ টাকার আসবাবপত্র, দুই লাখ ১০ হাজার মূল্যের ২১ শতাংশ জমি দেখানো হয়।
২০১৮ সালে নির্বাচনী ব্যয় উল্লেখ করলেও এবার ব্যয় সম্পর্কে কোনো তথ্য দেননি তিনি।
হিরো আলমের দাবি, হলফনামায় উল্লেখ করা এত সম্পত্তি নেই তার। তবে কিছুদিন আগে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে একটি ব্যক্তিগত গাড়ি কিনেছেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি বিক্রি এবং ডিশ সংযোগের ব্যবসায় করেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিশ লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন।
ইউটিউবে প্রায় ৫০০ মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন হিরো আলম।