কর্ণফুলী নদীতে আবারও চালু হচ্ছে ফেরি সার্ভিস
'ঝুঁকিপূর্ণ' কালুরঘাট সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল এড়াতে বোয়ালখালী উপজেলা ও বন্দরনগরীর মধ্যে কর্ণফুলী নদীর ওপর দিয়ে আবারও চালু হতে যাচ্ছে ফেরি চলাচল পরিষেবা।
আগামী মাসে কালুরঘাটে আবারও এই পরিষেবা শুরু হবে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে কর্ণফুলী নদীতে নিয়ে আসা হয়েছে দুটি ফেরি। শুরু হয়েছে সেতুর উভয় পাশে অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজ।
শত বছরের পুরনো জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুতে প্রতিদিন শতশত যানবাহন চলাচল করছে। একমুখী সেতু হওয়ায় এ পাড় থেকে ওপাড় যেতে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় যাত্রীদের। মূলত যাত্রীদের এই দুর্ভোগ কমাতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ভারী যানবাহনের চলাচল এড়াতেই সড়ক ও জনপথ বিভাগ নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, "কালুরঘাটে ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য নদীর উভয় পাশে অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে এই সার্ভিস চালু করা হবে। দুটি ফেরি নদীর দুপাশ থেকে চলবে। একটি রিজার্ভ থাকবে। ফেরি সার্ভিস চালু হলে কালুরঘাট সেতুর উভয় পাশের যানজট স্বাভাবিক হবে।"
তিনি জানান, কালুরঘাট সেতুটি অনেক আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ফলে যান চলাচলে মানুষের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ফেরি চলাচল শুরু হলে বড় গাড়িগুলো ফেরিতে যাবে। তখন কালুরঘাট সেতু দিয়ে শুধু রেল ও ছোট গাড়ি চলাচল করবে।
শতবছর পুরনো সেতুটিকে ২০০১ সালে 'ঝুঁকিপূর্ণ' বলে ঘোষণা করে রেলওয়ে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করতে বর্তমানে সেতুটিতে সংস্কারের কাজ চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেতুটি চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করে তোলার পরিকল্পনার জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তারা কাজ শুরু করেছে।
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, "নতুনভাবে মেরামতের পর এই সেতু দিয়ে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। দোহাজারী–কক্সবাজার ১০০ কিলোমিটার রেল পথের মধ্যে ৬৫ কিলোমিটারে রেললাইন বসে গেছে। আমরা চেষ্টা করছি ২০২৩–এর মধ্যে বাকি কাজ শেষ করতে।"
গত বুধবার চট্টগ্রামে রেলওয়ের একটি অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানান, আগামী বছরের শুরুতেই কালুরঘাট সেতুর কাজ শুরু হবে।
২০০৮ সালে, সেতুটিতে বড় ধরনের সংস্কার কাজ চালানোর পর কালুরঘাট এলাকায় নদীতে পুনরায় ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছিল; চালু ছিল ছয় মাস। দেশ স্বাধীনের পর থেকে এই এলাকায় বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার ফেরি সার্ভিস চালু হয়েছে বলে জানান বোয়ালখালী উপজেলার বাসিন্দারা।