রমজানে মাংস, দুধ, ডিমের দাম সহনশীল রাখতে পদক্ষেপ নেয়া হবে: মৎস ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, আসন্ন রমজান মাসে যেন মাংস, দুধ, ডিমের দাম সহনশীল থাকে সে জন্য ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কেন্দ্রর মাধ্যমে এসব পণ্য বিক্রি করবে সরকার।
শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র সংলগ্ন পুরাতন বাণিজ্য মেলা মাঠে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত 'প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী- ২০২৩' এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, 'রমজানের সময় আমরা ভ্রাম্যমাণ বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করব। সেক্ষেত্রে বেসরকারি খামারিদের সহায়তা নেব। আশা করি, রমজানে মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ইত্যাদি দ্রব্যমূল্য কোনভাবেই বাড়বে না। বরং কীভাবে সহনশীল রাখা যায়- সেই প্রক্রিয়ায় আমরা রয়েছি'।
প্রসঙ্গত, এক মাস আগেও ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, যা এখন ২৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ভোক্তাকে। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা ডজন। গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা , খাসির মাংসের কেজি ১,১০০ টাকা।
এ বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে শ ম রেজাউল করিম বলেন, 'আমি মনে করি বাজার ব্যবস্থাকে আরও সংহত ও মনিটরিং করা হলে- দ্রব্যমূল্য অনেকটাই কমে যাবে। আমি পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন-সহ সবাইকে অনুরোধ করবো যাতে কম লাভ করে। সকলে যাতে এসব খাবার খেতে পারে, সেজন্য জনসাধারণের সাধ্যের মধ্যে মূল্য নির্ধারণ করার আহ্বান জানাই'।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আরো বলেন, মানুষের খাদ্য তালিকায় অন্যতম অনুষঙ্গ মাংস, মাছ, ডিম বা দুধ। এসবের উৎপাদন বৃদ্ধিতে যত প্রকার সহায়তা ও পৃষ্ঠপোষকতা করা দরকার- সবটাই আমরা করছি।
তার মতে, উৎপাদন বেড়েছে কিন্তু বিশ্ব পরিস্থিতি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে প্রতিকূল। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার কারণে পোলট্রি, পশু খাদ্যের যেসব উপকরণ বিদেশ থেকে আনতে হয়- তা আনার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এসব কারণে খাবারের দাম বেড়েছে।
'বিদেশমুখীতা কমাতে সাভারে ফিড তৈরির একটি নতুন কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে পোলট্রি ও পশুখাদ্যের দাম বৃদ্ধির অযুহাতে আর উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়াতে পারবেন উৎপাদকরা'।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বিদেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত মাংসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে, সারাদেশে প্রাণিসম্পদকে বিস্তৃত করে সুস্বাদু মাংস আমরা বিদেশে রপ্তানি করব। এজন্য প্রস্তুতি হিসাবে রোগমুক্ত গবাদিপশু উৎপাদনে জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে প্রতিটি উপজেলায় ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক করে দেওয়া হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এমদাদুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ।
২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে 'স্মার্ট লাইভস্টক, স্মার্ট বাংলাদেশ' প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশব্যাপী প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী ২০২৩ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আগারগাঁওয়ে এ প্রদর্শনী শেষ হবে আগামীকাল রোববার। প্রদর্শনীতে খামারিরা তাদের উন্নত জাতের পশু প্রদর্শন করছেন। সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলো তাদের কার্যক্রম তুলে ধরছে।