ইন্টারপোলের রেড নোটিশের তালিকায় আরাভ খান
পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোল।
এর আগে গত সোমবার (২০ মার্চ) পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জানিয়েছিলেন, দুবাইয়ের আরাভ জুয়েলার্সের মালিক আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের অনুরোধ গ্রহণ করেছে ইন্টারপোল।
তিনি বলেন, 'আমি জানতে পেরেছি তার যে নামে আমরা চার্জশিট দিয়েছি, সে নামেই তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির চিঠি ইন্টারপোল গ্রহণ করেছে।'
আরাভ খানকে দেশে ফিরিয়ে আনার পেছনে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে।
তার পলায়নের ঘটনায় কোনো পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত আছে কি-না সেটিও তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান আইজিপি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও এর আগে জানান, আরাভকে দুবাই থেকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
গত ১৫ মার্চ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান দুবাইয়ের আরাভ জুয়েলার্সের শোরুম উদ্বোধনে অংশগ্রহণ করেন। তখন আরাভকে একটি ফেসবুক পোস্টে দেখার পর অনেকে তাকে হত্যা মামলার অভিযোগে পলাতক রবিউল ইসলাম হিসেবে চিহ্নিত করেন।
এরপর পুলিশ আরাভের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে। পুলিশের বিভিন্ন সূত্রের তথ্যমতে, সাবেক একজন অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তার আর্থিক সহযোগিতায় দুবাইয়ে আরাভ খান তার সোনার ব্যবসা শুরু করেছেন।
২০১৮ সালের ৮ জুলাই রাজধানীর বনানীর একটি বাসায় খুন হন এসবির পরিদর্শক মামুন ইমরান খান। পরদিন তার লাশ বস্তায় ভরে গাজীপুরের উলুখোলার একটি জঙ্গলে নিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মামলাটি তদন্ত করে পরের বছরের এপ্রিলে অভিযোগপত্র দাখিল করে ডিবি। অভিযোগপত্রে পুলিশ উল্লেখ করে, রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে একটি চক্র ধনী ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করত। তাদের লক্ষ্য ছিল অশ্লীল ছবি তুলে ধনী ব্যক্তিদের ব্ল্যাকমেইল ও চাঁদাবাজি করা।
২০১৯ সালের এপ্রিলে পুলিশ মামুন ইমরান খান হত্যা মামলায় রবিউলসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
অভিযোগপত্রে রবিউল ছাড়াও তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার কেয়াকেও আসামি করা হয়। মামলায় মামুনের বন্ধু রহমত উল্লাহ, স্বপন সরকার, দিদার পাঠান, মিজান শেখ, আতিক হাসান, সারোয়ার হোসেনসহ আরও দুই তরুণীকে আসামি করা হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, রবিউল গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার আশুটিয়া গ্রামের মতিউর রহমান মোল্লা ও লাকী বেগমের ছেলে।
২০২০ সালের ২০ অক্টোবর মামুন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর রবিউল ইসলাম পরিচয় দিয়ে একজন ব্যক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠান। প্রায় নয় মাস কারাভোগের পর ওই যুবক দাবি করেন, তিনি আসল রবিউল ইসলাম নন, তার প্রকৃত নাম আবু ইউসুফ। রবিউল ইসলামের কাছ থেকে মাসিক নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়ে আসামির পরিচয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন তিনি।
আদালত বিষয়টি তদন্ত করে ডিবিকে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।