'আমি তো পথে বসে গেলাম'
১২ বছর ধরে বঙ্গবাজারের পাশের মার্কেট ইসলামিয়াতে কাপড়ের ব্যবসা করেন মোহাম্মদ রনি। কিন্তু আজ ভোরে বঙ্গবাজারের আগুন থেকে বাঁচাতে পারেননি এতদিন ধরে গড়ে তোলা ব্যবসাকে। ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে তার ২৫-৩০ লাখ টাকার মালামাল পুড়ে ছাই।
ব্যবসায়ী রনি বিলাপ করে বলেন, "আমার ১২ লাখ টাকা ঋণ। সকালে পণ্যের অর্ডার দেওয়ার জন্য দোকানের ক্যাশে ৪ লাখ টাকা রাখে গিয়েছিলাম গত রাতে। সকালে এসে দেখি আমার সব মালামাল (গেঞ্জি) পুড়ে ছাই।"
"এখন আমি ছেলে সন্তান নিয়ে কিভাবে চলবো, পাওনাদারদের টাকা দিবো কিভাবে?"
রনি আরো বলেন, "ফায়ার সার্ভিসের গাফিলতির কারণে ইসলামিয়া মার্কেটে আগুন লেগেছে। প্রথমে আগুন লেগেছে বঙ্গবাজার মার্কেটে, যখন ব্যবসায়ী কিছু মালামাল ভেতর থেকে বের করে রাস্তায় এনে রাখে, তখন রাস্তায় রাখা মালামালে আগুন লেগে পাশের ইসলামিয়া মার্কেটে আগুন লেগে যায়।"
"আমরা ফায়ার সার্ভিসের কাছে বহু কান্নাকাটি করেছি যাতে শুরুতেই আগুন নেভানো হয়। তারা বলে তাদের কাছে পানি নেই," যোগ করেন তিনি।
মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সুমাইয়া গার্মেন্টস এর মালিক। ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করছেন। প্রায় ৯০ লাখ টাকার পণ্য ছিল তার দোকানে, যার প্রায় পুরোটাই আগুনে পুড়ে গেছে।
বাচ্চাদের পোশাক, থ্রি পিস ছিল তার দোকানে। কিছু পণ্য বের করতে পেরেছেন তিনি।
ঈদের বিক্রির জন্য ধার করে দোকানে পণ্য উঠিয়েছিলেন উল্লেখ করে সিরাজুল ইসলাম বলেন, "বুক ফেটে যাচ্ছে। আমার সব শেষ হয়ে গেছে। কিভাবে পরিবার নিয়ে চলবো?"
রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেটের ভয়াবহ আগুন এরইমধ্যে এনেক্সকো টাওয়ার ও পুলিশ সদর দপ্তরসহ পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ মুহূর্তে ফায়ার সার্ভিসের ৪৮টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নও (র্যাব) আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ভোর ৬টার দিকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে এবং তা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে। তবে, এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।