২০১৯ সালেই বঙ্গবাজারকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল: দমকল মহাপরিচালক
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেছেন, অগ্নিনিরাপত্তার দিক থেকে ২০১৯ সালের ১ এপ্রিলেই বঙ্গবাজারের কাপড়ের মার্কেটকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল।
'তখন একটি ব্যানারও টাঙিয়ে দেয়া হয়। এর পর ১০ বার নোটিশ দেয়া হয়েছিল'। কিন্তু তা উপেক্ষা করেই ব্যবসা চলছিল বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুর ১:২০ ঘটিকায় ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ব্যানারে লেখা ছিল, "অগ্নিনিরাপত্তার দিক থেকে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বিধায় সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।"
আগুন নিয়ন্ত্রণে দেরি হওয়ার পেছনে তিনটি কারণ চিহ্নিত করেছেন দমকলের মহাপরিচালক।
এ সময় তিনি তার মোবাইলে ধারণকৃত একটি ভিডিও দেখান, যেখানে উৎসুক জনতার ভিড়ে রাস্তা প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। 'এত ভিড়ের কারণে দমকল কর্মীদের প্রশিক্ষণ অনুসারে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে' বলেন তিনি।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় কারণ হিসেবে, ঘটনাস্থলে পানির অভাব ও বাতাসের দিকের কথা উল্লেখ করেন তিনি।
এসময় বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কয়েক গজ দূরে থাকা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ঘটনার তদন্ত করে সে অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি এ ঘটনায় আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, "ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সকল কর্মী জনগণের সেবায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন। গত ১ বছরে ১৩ জন ফায়ারফাইটার শহীদ হয়েছে। তারপরও কে বা কারা ফায়ার সার্ভিসের ওপর আঘাত হানল? এটা আমার বোধগম্য নয়। আমরা তো আপনাদের জন্যই জীবন দিচ্ছি।"
দমকল প্রধান জানান, আগুন নেভানোর প্রচেষ্টায় আটজন অগ্নিনির্বাপক আহত হয়েছেন, এদের মধ্যে গুরুতর আহত দুজন শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একদল ক্ষুদ্ধ জনতা ফায়ার সার্ভিসের সদ দপ্তরে হামলা করে। এসময় তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং কন্ট্রোল রুমেও হামলা করে। হামলায় ফায়ার সার্ভিসের অন্তত চার কর্মী আহত হন। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ ভোর ৬টায় বঙ্গবাজারের কাপড়ের মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়, টানা ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
এ ঘটনায় কারো নিহতের ঘটনা জানা যায়নি, তবে বঙ্গবাজার মার্কেটের অন্তত সাড়ে ৩ হাজার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।