কক্সবাজারে ভেসে আসা মৃত তিমি পুঁতে ফেলা হলো সৈকতেই
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা ২৫ টন ওজনের একটি মৃত তিমি সৈকতেই পুঁতে ফেলেছে প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, জালে আটকা পড়ে মারা গেছে তিমিটি।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের দরিয়ানগর পয়েন্টে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) বেলা ১২টার দিকে ভেসে উঠে বিশাল আকৃতির একটি তিমি। তবে ভাটার কারণে তিমিটি পানিতে ভেসে চলে যায় হিমছড়ি পয়েন্টে।
উপকূল থেকে ১ কিলোমিটার দূরে পানিতে ভাসতে থাকে প্রাণীটি। এসময় তিমির গায়ে জাল প্যাঁচানো অবস্থায় দেখা যায়, তাছাড়া প্রাণীটির শরীরেও ছিল আঘাতের চিহ্ন।
এর প্রায় ১০ ঘণ্টা পর মৃত তিমিটি রাত ১০টার দিকে ১০ কিলোমিটার দূরে এসে সৈকতের কলাতলী পয়েন্টের বালিয়াড়িতে আটকা পড়ে।
মঙ্গলবার বিকেলে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা ড্রোনের মাধ্যমে ছবি ও ফুটেজ সংগ্রহ করলেও রাতে তারা প্রাণীটি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন।
সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, "তিমিটির লেজের অংশ পঁচে গেছে। দৈর্ঘ্যে ৪০ ফুটের বেশি এই তিমি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, জেলেদের জালে আটকা পড়ে তিমিটির মৃত্যু হয়েছে।"
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মোহাম্মদ বেলাল হায়দার জানান, ভেসে আসা মৃত তিমিটি ব্রাইডস জাতের। এর বৈজ্ঞানিক নাম বেলিনিওপেট্রা ইডিনি।
তিনি বলেন, "এর আগে ২০২১ সালের ৯ ও ১০ এপ্রিল দুটি তিমি হিমছড়ির ঠিক একই পয়েন্টে ভেসে এসেছিল। যে দুটি তিমি গত বছর ভেসে এসেছিল সেগুলোও বেলিনিওপেট্রা ইডিনি প্রজাতির তিমি ছিল বলে আমরা ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়েছিলাম।"
ভেসে আসা তিমিটির শরীরে পচন ধরে যাওয়ায় ধারণা করা যাচ্ছে যে, বেশ কিছুদিন আগেই সমুদ্রে তিমিটির মৃত্যু হয়েছে।
বেলাল হায়দার আরো বলেন, "তিমি সাধারণত মৎস্য শিকারীদের জালে আটকা পড়ে, জাহাজের সাথে সংঘর্ষে কিংবা সমুদ্রে শব্দ দূষণের কারণে অন্য তিমিদের থেকে আলাদা হয়ে যায়। পরে দিকভ্রান্ত হয়ে উপকূলের অগভীর জলে এসে আটকা পড়ে মারা যায়। এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটি খুব সংবেদনশীল।"
মৃত তিমিটি সৈকতে পুঁতে ফেলার বিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরওয়ার শামীম বলেন, "বালিয়াড়িতে আটকে পড়া তিমিটি বিশাল আকৃতির হওয়ায় কোনোভাবেই অন্য কোথাও সরানো যায়নি।"
"আর মৃত তিমি থেকে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ বের হচ্ছিলো। তাই জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ক্রেন এনে বালিয়াড়িতে ১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত বিশাল গর্ত করে তিমিটিকে সেখানে পুঁতে ফেলা হয়," বলেন তিনি।