অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধানকে ৮ বছরের কারাদণ্ড
বাংলাদেশে অনলাইন ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা হিসেবে পরিচিত সেলিম প্রধানকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ৮ বছরের কারাদণ্ড ও ১১ লাখ টাকা জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
অবৈধ সম্মদ অর্জনের দায়ে ৪ বছরের কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে ৪ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে রোববার (৩০ এপ্রিল) রায় ঘোষণা করেন ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. বদরুল আলম ভুইয়া।
উভয় সাজা একসাথে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়।
সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণার সময় পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, 'শুধু সাজা দিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব না। তাই দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেবেন না। দাওয়াত দিলে যাবেন না।'
রায় ঘোষণার আগে সেলিম প্রধানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানাসহ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
রায় শুনতে সেলিম প্রধানের রাশিয়ান স্ত্রীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে অনলাইনভিত্তিক ক্যাসিনো ব্যবসার মূল হোতা হিসেবে নাম উঠে আসে সেলিম প্রধানের। থাইল্যান্ডে বসেই সেলিম জুয়ার কারবার চালাতেন। প্রয়োজনে আসতেন দেশেও।
ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সেলিম প্রধানকে আটক করে র্যাব-১। এরপর তার গুলশান, বনানীর বাসা ও অফিসে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে ২৯ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ এবং বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও হরিণের চামড়া জব্দ করা হয়। হরিণের চামড়া উদ্ধারের ঘটনায় ওই দিনই সেলিম প্রধানকে বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একই বছরের ২৭ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এই মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছিল। মামলাটি তদন্ত করে তার নামে মোট ৫৭ কোটির বেশি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালত সেলিমের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন।