মিয়ানমারে রেখে আসা গ্রামের অস্তিত্ব দেখেনি রোহিঙ্গারা
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/05/05/whatsapp_image_2023-05-05_at_2.21.21_pm.jpeg)
হাইলাইটস:
- ২০১৭ সালে রোহিঙ্গারা যে গ্রাম রেখে পালিয়েছিল, সেখানে এখন সারি সারি ক্যাম্প
- এসব ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের রাখার পরিকল্পনা মিয়ানমারের
- রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিয়ে প্রত্যাবাসনের দাবি থাকলেও, আপাতত তা দেওয়া হবে না
- প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে থাকতে হবে এনভিসি কার্ডে
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু থেকে ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে পালিয়ে আসার সময় যে গ্রাম রেখে এসেছিলেন তার কোনো অস্তিত্ব দেখেননি রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা। ওখানে এখন সারিবদ্ধ ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে।
প্রত্যাবাসনের পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখতে যাওয়া বাংলাদেশে বসবাসরত ২০ রোহিঙ্গাসহ ২৭ সদস্যের প্রতিনিধিদল শুক্রবার বিকাল পৌনে ৫ টায় মিয়ানমার থেকে আসার পর এমন তথ্য জানিয়েছেন সফরকারী দলে রোহিঙ্গা আবু সুফিয়ান।
আবু সুফিয়ান জানান, মংডু শহরের আশপাশে কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখেছেন তারা। ওখানে গ্রামের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। সবকিছু পাল্টে গেছে। তবে সারি সারি ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে ওসব জায়গায়। এসব ক্যাম্পেই রোহিঙ্গাদের নিয়ে রাখার পরিকল্পনা করছে মিয়ানমার।
সফরকারী দলে মোহাম্মদ সেলিম নামের অপর এক রোহিঙ্গা জানান, মিয়ানমারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি নিজেই কথা বলেছেন। প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি জানালেও তাকে জানানো হয়েছে আপাতত নাগরিকত্ব দেয়া হবে না। এনভিসি কার্ডে তাদের ক্যাম্পে থাকতে হবে।
মিয়ানমারের এমন শর্তে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনে আগ্রহী হবে বলে মনে করছেন না সেলিম।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজারের টেকনাফের জালিয়াপাড়া ঘাট থেকে মিয়ানমারের উদ্দেশে রওয়ানা করে। বেলা ১১টার দিকে তারা মংডু শহরের পৌঁছে। উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পের ২০ রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে রোহিঙ্গা-সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত ৭ কর্মকর্তা এই সফরে যান। রোহিঙ্গাদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী ছিলেন।
কক্সবাজারস্থ শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের মংডু শহরের আশপাশে পরিদর্শনকালে পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি দেখা গেছে। ওখানে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা, ব্যবসা করা মানুষের ৮০ শতাংশই দেখা গেছে রোহিঙ্গারা।
আরআরআরসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, এরপর মিয়ানমারের একটি দল দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সফরে আসবে। তখন প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা হবে।
আরআরআরসি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ আগষ্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হওয়ার পর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মিয়ানমারের কাছে প্রত্যাবাসনের জন্য ৮ লাখ ৮২ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকায় দিয়েছিল। সে তালিকা যাছাই-বাছাই করে মাত্র ৬৮ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা চূড়ান্ত করে তা বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠিয়েছিল মিয়ানমার।
২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে মিয়ানমারে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি। এরপর ২০১৯ সালের অগাস্টে চীনের তরফ থেকে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর আরেকটি উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু নাগরিকত্বের বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যেতে চায়নি। এখন আবার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে চীনের তরফ থেকে এই তৃতীয় দফার উদ্যোগ নেওয়া হলো।