ওয়াসার বোর্ড চেয়ারম্যান অপসারণ “শ্যুট দ্য মেসেঞ্জার” চর্চার উদ্বেগজনক দৃষ্টান্ত: টিআইবি
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগকারী বোর্ড চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাকে অপসারণ করার ঘটনায় অভিযুক্তকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্বেগজনক উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
আজ মঙ্গলবার (২৩ মে) দেওয়া এক বিবৃতিতে টিআইবি জানায়, বিষয়টিকে সরকারের শীর্ষ অবস্থান থেকে দুর্নীতির প্রতি শূন্য সহনশীলতার ঘোষণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাশাপাশি ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির তথ্য প্রকাশকারীকে সুরক্ষা প্রদানের আইনগত বাধ্যবাধকতার সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক বলে মনে করছে তারা।
গণমাধ্যমে প্রেরিত বিজ্ঞপ্তিতে সদ্য সাবেক চেয়ারম্যানের অভিযোগ আমলে নিয়ে সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ তদন্তসাপেক্ষে অভিযুক্তের জবাবদিহি নিশ্চিতের আহ্বান জানানো হয়েছে টিআইবির পক্ষ থেকে।
ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ উত্থাপনের পরই বোর্ড চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনাকে কেবল স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার ফল হিসেবে দেখার সুযোগ নেই- উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, 'গোলাম মোস্তফার চেয়ারম্যান পদে থাকার মেয়াদ গত বছর অক্টোবরে শেষ হওয়ার পর এতদিন পেরিয়ে গেলেও নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ হয়নি। অথচ, ওয়াসার এমডির বিরুদ্ধে বোর্ড চেয়ারম্যান মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার ঠিক পাঁচ দিনের মাথায় নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হলো।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী, ঘটনাটিকে যদি "কাকতালীয়" হিসেবে মেনেও নেওয়া হয়, তবুও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অভিযোগকারীকে সরিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে "ওয়াসা পরিচালনায় এমডির ইচ্ছা-ই শেষ কথা, আর নিজের স্বার্থ সুরক্ষায় যে কাউকে ওয়াসা থেকে বের করে দেওয়ার ক্ষমতা ওয়াসা এমডির রয়েছে"- এই অভিযোগকেই প্রতিষ্ঠিত করা হলো।
তিনি আরো বলেন, "এর ফলে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই বার্তাই দিল, যে ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থানের বলে অবারিত বিচারহীনতার লাইসেন্স পাওয়া যায়; প্রয়োজনে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বার্তাবাহক বা অভিযোগকারীকে, তা যে-ই হোক না কেন, তাকে স্তব্ধ করতে "শ্যুট দ্য মেসেঞ্জার" চর্চার ব্যবহারে কোনো দ্বিধা করা হবে না।"