সৌদি আরবের বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ জমি নিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, সৌদি সরকার তাদের দেশে মিশন স্থাপনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে যে জমি দেয়, তার পাশেই বাংলাদেশের জন্য সমপরিমাণ জমি দিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ দীর্ঘদিন সেখানে মিশন স্থাপন না করায়, ওই ফাঁকা জমিতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের গাড়ি পার্কিং করতো। পরে এক সময় সৌদি সরকারের কাছ থেকে ওই জমি যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে নেয়।
আজ শনিবার (২৭ মে) ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে প্রয়াত অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের জমি নেওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী হওয়ার আগে বিদেশে বাংলাদেশের মিশন ছিল চারটি। বর্তমানে এ সংখ্যা ৫০টির উপরে। এমনকী বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে স্বাধীনতা দিবস, পহেলা বৈশাখসহ জাতীয় দিবস আয়োজনে আগে কখনও অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হতো না। আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি প্রথম বরাদ্দ দেন, যা এখনও চলমান আছে।
এছাড়া, জাতীয় পরিচয়পত্রধারী সকল নাগরিকের জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামুলক করার প্রস্তাব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইআরএফ আয়োজিত স্মরণ সভায় মোমেন বলেন, মুহিত ভাই অর্থমন্ত্রী থাকার সময় আমি করের আওতা বাড়ানোর জন্য যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে, তাদের সবার রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে আজপর্যন্ত সেটি হয়নি। এটি করা সম্ভব হলে বর্তমানে আমাদের যে কর-জিডিপি অনুপাত রয়েছে সেটি বেড়ে ২০-২৫ শতাংশে উন্নীত হতো।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে যেসব নাগরিকদের কার্ড রয়েছে, তাদের জন্য ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামুলক। এটি করা সম্ভব হলে আমাদের কর-জিডিপি অনুপাত ৭-৮ শতাংশের মধ্যে সীমিত থাকতো না।
চলতি অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের সময়ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে চিঠি দিয়ে এনআইডি কার্ডধারীদের জন্য রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামুলক করার প্রস্তাব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে তা আমলে নেয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়।
স্মরণসভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও সাবেক অর্থ সচিব ফজলে কবির ও অর্থ বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ প্রয়াত অর্থমন্ত্রীর স্মরণীয় বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন। তারা দু'জনই মুহিতের অধীনে অর্থ সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
তারা আবুল মাল আবদুল মুহিতকে একজন বড় মাপের অর্থনীতিবিদ, সাদা মনের রাজনীতিবিদ ও দক্ষ আমলা হিসেবে উপস্থাপন করেন।
ইআরএফের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে স্মরণসভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।