কয়লার অভাবে বন্ধ পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২য় ইউনিট
চলমান কয়লা সংকটের কারণে ১,৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট বন্ধ হয়ে গেছে।
আজ বেলা ১২টা ১০ মিনিটে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২য় ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায় বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রের একজন প্রকৌশলী।
এর আগে, গত ২৫ মে পায়রা প্রকল্পের প্রথম ইউনিটটি বন্ধ হয়ে যায়; এতে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের একটি অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
শুধু কয়লা নয়, বিদ্যুৎ উৎপাদনে অন্যান্য ধরনের জ্বালানি যেমন- তেল, গ্যাসেরও সংকট রয়েছে দেশে। ফলে চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যেও দেশজুড়ে চলছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং।
এদিকে, শনিবার (৩ জুন) বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, শিগগিরই আবারও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "কয়লা আমদানির প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি, ২৫ জুন থেকে পায়রা পুনরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম হবে।"
পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্টের দুই ইউনিট পূর্ণ ক্ষমতায় চালতে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টন কয়লা লাগে। এই চাহিদা মেটাতে ২০১৮ সালের শুরু থেকেই ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানি করে আসছে পায়রা পাওয়ার প্ল্যান্টের মালিকানার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (পিভিটি) লিমিটেড।
তবে ডলার সংকটের কারণে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (পিভিটি) লিমিটেড চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কয়লা আমদানির বিল বাবদ সরবরাহকারীদের কাছে ৩৯০ মিলিয়ন ডলার দেনা রয়েছে।
বকেয়া বিল পরিশোধ না করায় সরবরাহকারীরা বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (পিভিটি) লিমিটেডকে কয়লা সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। ফলে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে পায়রার উভয় ইউনিট।
এদিকে, প্রচণ্ড গরমে প্ল্যান্টটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুতের ঘাটতি আরও তীব্র হয়েছে। জাতীয় গ্রিডে এই প্ল্যান্ট দৈনিক প্রায় ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বরিশাল, গোপালগঞ্জ ও ঢাকা এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তাই সরবরাহের ঘাটতিতে এসব এলাকার মানুষ তীব্র লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছেন।
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট টিপিপি'র প্ল্যান্ট ম্যানেজার শাহ আবদুল মওলা অবশ্য বলেছেন, কয়লা আমদানি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে; কারণ বকেয়া বিলের প্রায় ৯০ মিলিয়ন ডলার ইতোমধ্যেই পরিশোধ করেছেন তারা।
"আমরা ২৫ থেকে ৩০ জুনের মধ্যে প্ল্যান্টটি পুনরায় চালু করতে পারবো বলে আশাবাদী," বলেন তিনি।
বিপিডিবি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে দৈনিক ১৫,৫০০ থেকে ১৬,০০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ২৩,৪৮২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু দেশে উৎপাদন হচ্ছে ১৪,০০০ থেকে ১৪,৫০০ মেগাওয়াটের মতো। ফলে চাহিদার তুলনায় দৈনিক ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ১,৫০০ থেকে ২,০০০ মেগাওয়াট।