দেশে তালাকের হার বেড়েছে, শহরের চেয়ে গ্রামে বেশি
দেশে তালাকের হার বাড়ছে। আর বিবাহবিচ্ছেদের হার শহরের মানুষের তুলনায় গ্রামীণ অঞ্চলে বেশি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) 'বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২২' শীর্ষক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জরিপ অনুযায়ী, ২০২১ সালে প্রতি ১ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে তালাকের অনুপাত ছিল ০.৭৩। ২০২২ সালে এ অনুপাত বেড়ে ১.৪ হয়েছে।
তালাকের হার পল্লী অঞ্চলের মানুষের মধ্যে শহরের মানুষের তুলনায় প্রায় ৮০ শতাংশ বেশি। গ্রামীণ এলাকায় তালাকের হার প্রতি হাজারে ০.৮ থেকে বেড়ে ১.৯টি হয়েছে। শহরে এই হার ০.৫ থেকে বেড়ে ১টি হয়েছে।
তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ এস এম আমানউল্লাহ-র মতে, বাস্তবে দেশে তালাকের হার আরও বেশি। তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'বিবিএস যে পদ্ধতিতে তালাকের হিসাব করে, তা যথার্থ হয় না। ভুল পদ্ধতির কারণে প্রকৃত তথ্য উঠে আসে না।'
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বেই কোভিডের সময় থেকে তালাকের হার বেশি উল্লেখ করে আমানউল্লাহ বললেন, 'বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সম্পর্কের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হচ্ছে। আবার বিশ্বায়নের যুগে ছেলে-মেয়ে সবার মধ্যে ক্যারিয়ারমুখী হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এতে পারিবারিক দ্বন্দ্বও তৈরি হচ্ছে। ফলে তালাক হয়ে যাচ্ছে। আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে জটিলতা তৈরি হয়। এতে সামাজিক বন্ধন নষ্ট হচ্ছে।'
তিনি বলেন, এসব জটিলতার ফলে আগামীতে তালাকের হার আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।
বিবিএসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে কয়েক বছর ধরে বিবাহবিচ্ছেদ বাড়ছে। তালাক বেশি বাড়ছে শিক্ষিত দম্পতিদের মধ্যে। বিবিএসের ২০২১ সালের 'বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস' প্রতিবেদনেও বলা হয়, ১৫ বছর ধরে দেশে তালাকের হার ঊর্ধ্বমুখী। আর তালাকের সবচেয়ে বেশি রাজশাহী বিভাগে, সবচেয়ে কম সিলেটে।