ঢাকায় সমাবেশ কাল: মাঠ নিয়ন্ত্রণের প্রত্যয় আ.লীগের; আন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে ঘোষণা বিএনপির
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা আগামীকাল উভয় দলের সমাবেশকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে বাকযুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের নেতারা 'বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্ত' রুখে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। আর বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে, তারা সরকারের 'ভীতি প্রদর্শনের' কাছে নতিস্বীকার করবে না।
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ-এর উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে এক সংবাদ সম্মেলনে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, শুক্রবারের শান্তি সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি-জামায়াতের চক্রান্ত রুখতে তাদের নেতাকর্মীরা রাজপথে নামবে।
শুক্রবার (২৮ জুলাই) বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে তাদের শান্তি সমাবেশের আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নিখিল বলেন, 'বিএনপি একটি দেশ ধ্বংসকারী দল… আমরা বিএনপির কর্মসূচি মোকাবিলায় সমাবেশ করছি না।
'পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে। বিএনপি-জামায়াত তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যত নষ্ট করতে মাঠে নেমেছে। তাদেরকে রুখে দেওয়ার জন্য আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মাঠে নেমেছে।'
তিনি বলেন, লন্ডনে বসে তারেক রহমান যুবসমাজকে ধ্বংসের নীলনকশা করছেন।
যুবলীগ সভাপতি বলেন, আগামীকাল তাদের সমাবেশে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবেন এবং বাংলার মাটিতে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারীদের আর জায়গা দেওয়া হবে না।
ব্রিফিংয়ে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু বলেন, 'বিএনপি-জামায়াত যাতে কোনো নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমরা সতর্ক থাকব।
'আগামীকালের সমাবেশের জন্য আমরা সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি, এবং মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। আমাদের লক্ষ্য এই সমাবেশে পাঁচ লাখের বেশি লোক জমায়েত করা।'
ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন জানান, এই সমাবেশে ছাত্রলীগের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শাখার কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেবেন।
সাদ্দাম বলেন, 'আমরা দেখাতে চাই যে বিএনপি কর্তৃক সংগঠিত সহিংস কর্মসূচিকে সাধারণ মানুষ গ্রহণ করেনি।'
এদিকে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বানচালের চেষ্টা সত্ত্বেও বিএনপির চলমান আন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
'সরকারের হামলা-মামলা সত্ত্বেও আমাদের চলমান আন্দোলন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে,' বলেন তিনি।
বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে নিরাপত্তা বাহিনী গ্রেপ্তার করেছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারপরও নেতা-কর্মীদেরকে আগামীকাল শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে দলে দলে সমাবেশে যোগ দেওয়া আহ্বান করছি।'
বিএনপির উদ্যোগ ও প্রশাসনের বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি কখনো অশান্তির রাজনীতি করে না।
'বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা নেই। তবে অন্য পক্ষের থাকতে পারে,' বলেন তিনি।
এর আগে আজ বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও অভিযোগ করেছেন, সরকার ভীতি ছড়াতে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে।
'এটি সরকারের একটি অর্থহীন প্রচেষ্টা। যত বেশি গ্রেফতার করা হবে, আমাদের আন্দোলন তত শক্তিশালী হবে,' বলেন তিনি।
একই দিন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শুক্রবারের নির্ধারিত সমাবেশের জন্য আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোকে অনুমতি দিয়েছে।
তবে মাওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়াম থেকে জিরো পয়েন্টে পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে তাদের সমাবেশ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বলে শর্ত দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের মোড় থেকে নাইটিঙ্গেল এলাকার বাইরে সমাবেশ না নিয়ে যাওয়ার শর্তে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপিকে তাদের দলীয় কার্যালয়ের বাইরে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে ডিএমপি।