সৌদিতে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি পরিবারের ৩ সদস্য নিহত
সৌদি আরবের দাম্মামে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের একটি পরিবারের বাবা, ছেলে ও মেয়ে নিহত হয়েছেন। আহত হয়ে স্ত্রী ও বড় মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি। এ ঘটনায় ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ চরকমলাপুরে নিহতের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
নিহতরা হলেন- মোবারক হোসেন (৪৮), তার দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে তানজিল আব্দুল্লাহ (১৭) ও অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে মাহিয়া মাহি (১৪)। এ ঘটনায় আহতরা হলেন- মোবারক হোসেনের স্ত্রী শিখা আক্তার (৪০) ও বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মীম (১৯)। তারা স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) মোবারক হোসেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে ওমরাহ পালনের জন্য পবিত্র মক্কার উদ্দেশ্য রওনা হন । ওমরাহ্ পালন শেষে শনিবার (৫ আগস্ট) সৌদি আরব সময় সকাল ১০টার দিকে তারা দাম্মাম শহরের নিজ বাসায় ফিরছিলেন। পথে আল-কাসিম নামক স্থানে পৌঁছালে পেছন থেকে একটি গাড়ি তাদের গাড়িকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে তাদের গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে যায় এবং গাড়িতে থাকা পাঁচজন গুরুতর আহত হন। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে সেখানকার চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বাকি দুজন আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিহত সৌদি প্রবাসী মোবারক হোসেন ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক গ্রামের শেখ মোহাম্মদ আলী ওরফে মোহন শেখের বড় ছেলে। তার পাঁচ ভাই আর তিন বোনের মধ্যে চার ভাই সৌদি প্রবাসী।
মোবারক হোসেন প্রায় দুই যুগ ধরে পরিবার নিয়ে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে বসবাস করে আসছিলেন । সেখানে তার একটি গাড়ি মেরামতের দোকান রয়েছে। প্রায় ৩০ বছর সৌদিআরবে বসবাস তার। গত চার মাস আগেও পরিবার নিয়ে দেশে বেড়াতে এসেছিলেন তারা।
দুর্ঘটনার পর তাদের মৃত্যুর খবর পেয়ে এদেশে অবস্থানকরা তাদের স্বজনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
নিহতের পিতা শেখ মোহম্মদ আলী ওরফে মোহন শেখ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বড় নাতনি মিমের কানাডা যাওয়ার সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছিল। তার আগে তারা পরিবার নিয়ে ওমরাহ করতে যায়। তিনি বলেন, আমার ছেলে আর দুই নাতির জীবন শেষ হয়ে গেছে এই দুর্ঘটনায়। আমি আর কি বলবো।
তিনি জানান, ফোরম্যানের চাকরি নিয়ে মোবারক হোসেন সৌদি আরবে যান। পরে সেখানে গাড়ির গ্যারেজ খুলেন।
নিহতের ছোট ভাই জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বুধবার রাতে বড় ভাই মোবারক হোসেন তাদের ফোন করে জানান যে, তারা পরেরদিন ওমরাহ করতে যাবেন। তার ভাইয়ের বড় মেয়ের কানাডা যাওয়ার কথা ছিল আর বাচ্চাদেরও পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা স্বপরিবারে ওমরায় যাচ্ছেন বলে জানান। এটিই ছিলো তাদের সাথে শেষ কথা।