ভারত বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কিছু বললে তা হস্তক্ষেপ নয়: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের বার্তা দেওয়া দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয়।
শনিবার (১৯ আগস্ট) ডেঙ্গু সচেতনতা বিষয়ক একটি কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কথা বলার সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আঞ্চলিক রাজনীতির বিষয়ে এই অঞ্চলে ভারত ও আমেরিকা উভয়েরই অভিন্ন স্বার্থ আছে। তাই ভারত আমেরিকাকে কিছু বললে তারা তাদের স্বার্থে বলেছে।'
এর আগে শুক্রবার (১৯ আগস্ট) জার্মানভিত্তিক ডয়চে ভেলে (ডিডব্লিউ) এবং ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনকে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে যে 'বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান ভূমিকায় ভারত খুশি নয়। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার দুর্বল হলে তা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র কারও পক্ষেই ভালো হবে না বলে মনে করে ভারত।'
ভারতের হস্তক্ষেপ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করতে চাই না। ভারত আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। পঁচাত্তরে আমরা ক্ষমতা হারিয়েছি। তখন তো ভারত আমাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়নি! একইভাবে ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতা থেকে চলে গেছি। জনগণ চায়নি, আমরা সরে গেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'যারা [যুক্তরাষ্ট্রকে বার্তা পাঠিয়ে] ভারতের হস্তক্ষেপ বলেন, তাহলে একাত্তর সালে কি হয়েছিল? ভারত সেই সময় আমাদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল। তাদের সৈন্যরা রক্ত দিয়েছে, আমাদের শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। অস্ত্র দিয়েছে, ট্রেনিং দিয়েছে; সেটা কি অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ?'
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, 'ভারতীয় ভূখণ্ডে গিয়ে জিয়াউর রহমান সাহেব মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিলেন, সেটা কার হস্তক্ষেপ? আজকে আঞ্চলিক রাজনীতিতে ভারত আর আমেরিকার এই ভূখণ্ডে অভিন্ন স্বার্থ আছে। অভিন্ন স্বার্থের বিষয়ে তারা একে অন্যকে এই স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে পারে। এ পর্যন্ত ভারত একবারও বলেনি যে, তারা আমাদের এখানে অমুককে চায়, অমুককে চায় না। এ ধরনের কোনো মন্তব্য আমরা ভারত থেকে পাইনি।'
মন্ত্রী বলেন, 'আমাদের ক্ষমতায় বসাবে বাংলাদেশের জনগণ। বিএনপি তাকিয়ে আছে শুধু আমেরিকার দিকে—কখন নিষেধাজ্ঞা, ভিসানীতি দেবে তার আশায়। আর আওয়ামী লীগ তাকিয়ে আছে দেশের জনগণের দিকে।'
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মানুষের জীবন ডেঙ্গু থেকে নিরাপদ নয়। আর বিএনপির হাতে দেশের গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিরাপদ নয়।
'আজকে দেশের প্রধান দুই অভিন্ন শত্রু ডেঙ্গুর মতো ভয়ংকর বিএনপিকেও প্রতিরোধ করতে হবে,' বলেন তিনি।
এর আগে আজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে ভারতের কূটনৈতিক বার্তা দেওয়ার খবর সত্য হলে তা দুর্ভাগ্যজনক এবং এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্য ভালো হবে না।
ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভারত ব্যবস্থা নিলে তা দুঃখজনক হবে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারত হস্তক্ষেপ করছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাছ থেকে এটা আশা করা যায় না।
তিনি বলেন, 'আমরা আশা করি ভারত বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানাবে। পাশাপাশি তারা সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সমর্থন দেবে।'