শুক্রবার থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে সুন্দরবন
তিন মাস বন্ধ থাকার পর বন বিভাগ শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) পর্যটকদের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন ও ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট সুন্দরবন পুনরায় চালু করতে যাচ্ছে।
সুন্দরবনের বন্য প্রাণীদের প্রজনন ঋতুর কারণে গত তিনমাস বনটিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, 'প্রতিবছর সুন্দরবনের প্রজনন মৌসুমে তিন মাস পর্যটক ও বনজীবীদের বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময় বন কোলাহলমুক্ত থাকায় বন্যপ্রাণী ও মাছের প্রজাতি অবাধে চলাফেরা ও নির্বিঘ্নে প্রজনন করতে পারে।'
তবে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে হলে সবাইকে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে।
'প্লাস্টিকের পানির বোতল, চিপসের প্যাকেটের মতো একবার ব্যবহার করা হয় এমন প্লাস্টিক সঙ্গে নেওয়া যাবে না। বন বিভাগ থেকে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি নেওয়ার সময় পর্যটক, ট্যুর পরিচালক ও বনজীবীদের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হবে,' দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন এ বন কর্মকর্তা।
এর আগে গত ৩১ মে বন বিভাগ ১ জুন থেকে সুন্দরবনে তিন মাসের জন্য পর্যটন ও মাছধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
বন উন্মুক্ত করার আগে স্থানীয় জেলে, ট্যুর পরিচালক, লঞ্চ ও নৌকা চালকেরা আবারও সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এদিকে স্থানীয় ইকো কটেজগুলোও পর্যটকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে প্রস্তুত হয়েছে।
সুন্দরী ইকো রিসোর্ট-এর পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'পর্যটকদের বরণে সব আয়োজন শেষ করেছি আমরা। রিসোর্টে বসে সুন্দরবনের পাখ-পাখালির ডাক, পায়ে হেঁটে সুন্দরবনের অপার সৌন্দর্য উপভোগ, নিরাপদে রাতযাপন ইত্যাদি সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে আমাদের।'
মোংলা ঘাটের ট্রলারচালক রুবেল হোসেন বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে মোংলা থেকে করমজল পর্যন্ত ট্রলারে দর্শনার্থী বহন করেই আমি জীবিকা নির্বাহ করতাম। সুন্দরবন বন্ধের তিনমাস বেকার অবস্থায় ছিলাম।
'আশা করি কাল থেকে আবারও সেই কর্মজীবনে ফিরতে পারব। এ জন্য ট্রলার পরিস্কার ও কিছু সাজগোজেরও কাজ করেছি।'
বন বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, সুন্দরবনের বৈচিত্র্যময় বাস্তুতন্ত্রে ১১৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হরিণসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী, সুন্দরী গাছসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। এছাড়া এ বন ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড ও ৩০০ প্রজাতির পাখিরও আবাসস্থল।
অন্যদিকে বনটির ১,৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার জলজ পরিবেশে কুমির, ডলফিনসহ মাছের ২৯১টি প্রজাতি পাওয়া যায়।