সীতাকুণ্ডে আহত সেই বানরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিভাসুতে স্থানান্তর
বৈদ্যুতিক শকের ক্ষত নিয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির হওয়া সেই বানরটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অবশেষে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) স্থানান্তর করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহযোগিতায়, সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার নেতৃত্বে সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে চারটার দিকে প্রাণীটিকে উদ্ধার করা হয়।
সেখানে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার পর বানরটিকে পুনরায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং সেখান থেকে সময়-সুযোগ বুঝে এটিকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে, বলেন চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৫ দিন আগে একটি বয়স্ক পুরুষ বানরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং এর আশেপাশের এলাকায় ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়।
গত ২৬ আগস্ট একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে শক খেয়ে গুরুতর আহত হয় বানরটি।
স্থানীয়রা জানান, তারা বানরটিকে ধরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এরপরে কয়েকদিন বানরটির আর দেখা মেলেনি। কিন্তু শনিবার আবারও বানরটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির হয় এবং যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন চিকিৎসক ডা. নূরুদ্দিন রাশেদ বলেন, "শনিবার কাজ শেষে বেরোতে যাওয়ার সময় হাসপাতালের বারান্দায় বানরটিকে বসে থাকতে দেখি। এরপর আমি বানরটির ক্ষত ড্রেসিং করে দেই।"
ইউএনবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরেরদিন (৩ সেপ্টেম্বর) আবারও বানরটি হাসপাতালের বারান্দায় হাজির হয় বলে জানান ডা. নূরুদ্দিন। তিনি বলেন, "বানরটিকে দেখে মনে হচ্ছিল এর খুব কষ্ট হচ্ছে এবং কয়েকটি ক্ষতস্থানে পচন ধরা শুরু করেছিল। বৈদ্যুতিক শক থেকে এমনটা হতে পারে। আজকে অফিসে আসার পর আমি বানরটি কোথায় আছে তা খোঁজ নেই। তারপর দেখা যায়, হাসপাতালের বাইরে একটি গাছের ডালে বানরটি বসে আছে।"
বানরটির শরীরে আঘাতের তীব্রতা বিবেচনা করে, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা তাহমিনা আরজুকে এ বিষয়ে জানানো হয়। এরপর তিনি চিকিৎসকদের একটি দল নিয়ে সোমবার হাসপাতালে আসেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মীদের এবং স্থানীয় যুবকদের সহায়তায় তারা বানরটিকে ধরে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। কিন্তু প্রাণীটির শরীরে ক্ষতের অবস্থা শোচনীয় হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল।
পরবর্তীতে বানরটিকে চিকিৎসার জন্য সিভাসুতে পাঠানো নয়।
ডা. তাহমিনা আরজু বলেন, তার টিম বানরটিকে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বানরটিকে ধরে রাখা কঠিন হওয়ায়, অ্যানেস্থেশিয়া ছাড়া প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব ছিল না।
পরবর্তীতে, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সহায়তায় সোমবার বিকালে বানরটিকে নিরাপদে সিভাসুতে স্থানান্তর করা হয়।
দীপান্বিতা ভট্টাচার্য জানান, তার দল সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বানরটিকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম শহরে নিয়ে আসে।
"বানরটির শরীরে কি ধরনের আঘাত রয়েছে তা এখনই বলতে পারছি না। তবে বৈদ্যুতিক শক থেকে যে গুরুতর আঘাতই পেয়েছে তা স্পষ্ট।"