সীতাকুণ্ডে আহত সেই বানরটিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে
সীতাকুণ্ডে বৈদ্যুতিক শকে গুরুতর আহত সেই বানরটিকে বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরে বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে সোমবার রাতে প্রাণীটিকে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে বানরটির থাকার জায়গার অভাবে শেষ পর্যন্ত এটিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।
চট্টগ্রাম বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য বলেন, মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) ফলো-আপ চিকিৎসার জন্য বানরটিকে সিভাসুতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তারপর আবার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগে ফিরিয়ে আনা হয়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার কারণে খুব সম্ভবত বানরটি খুব উঁচু জায়গা থেকে পড়ে গিয়েছিল, ফলে এটি পিঠে আঘাত পেয়েছে। একইসঙ্গে বানরটির হাত ও পা পুড়ে গিয়ে ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হয়ে গেছে।"
যদিও বানরটি শারীরিকভাবে এখনও দুর্বল, তবে ধীরে ধীরে সেরে উঠছে এটি। বিশেষজ্ঞ পশুচিকিৎসকরা বানরটির অবস্থা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। তারা নিশ্চিত করেছেন যে সংক্রমণ সম্পূর্ণ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত বানরটির শরীরে ক্ষতর চিকিৎসা করা হবে। বানরটি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেলে এটিকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে, বলেন দীপান্বিতা।
তিনি আরও জানান, তারা গত ২৪ আগস্ট প্রথম বানরটির সম্পর্কে অবগত হন যে এটি সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। এরপর তারা বানরটিকে উদ্ধার করতে একটি দল পাঠান, কিন্তু উদ্ধারকারী দল আসার আগেই বানরটি ওই এলাকা ছেড়ে চলে যায়। তারপর তারা স্থানীয় বন বিভাগকে খবর দেন বানরটির অবস্থান জানানোর জন্য।
যেহেতু বিশেষজ্ঞ পশুচিকিৎসকদের অধীনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তাই বানরটি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিশেষজ্ঞ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তাহমিনা আরজু।
স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১৫ দিন আগে একটি বয়স্ক পুরুষ বানরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং এর আশেপাশের এলাকায় ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং রোগীরাও বানরটিকে খাবার দিতেন এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশেপাশেই থাকতে শুরু করে এটি। প্রতিদিন সকালে বানরটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাছে আসতো এবং স্থানীয়দের দেওয়া খাবার খেত।
গত ২৬ আগস্ট একটি বৈদ্যুতিক খুঁটিতে শক খেয়ে গুরুতর আহত হয় বানরটি। এরপর স্থানীয়রা বানরটিকে ধরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এর জীবন রক্ষা করেন।
গত শনিবার আবারও বানরটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির হয় এবং যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। বানরটিকে এ অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নূরুদ্দিন রাশেদ বানরটিকে চিকিৎসা দেন। এরপর সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বানরটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) স্থানান্তর করা হয়।