ডিজিটাল আইনে গ্রেপ্তার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজার জামিন বহাল
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে দীর্ঘদিন কারাগারে থাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরার জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বিভাগ বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) এ আদেশ দেন।
আজকের এ আদেশের ফলে খাদিজার মুক্তিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী বি এম ইলিয়াস।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে হাইকোর্ট তার জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ স্থগিত করে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি।
অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগে ২০২০ সালে অক্টোবরে খাদিজাতুল কুবরা এবং অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানায় আলাদা দুটি মামলা করে পুলিশ।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে করা দুটি মামলার এজাহারের অভিযোগ এবং বর্ণনা প্রায় একইরকম। একটি মামলার বাদী নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খাইরুল ইসলাম এবং অন্যটির কলাবাগান থানার এসআই আরিফ হোসেন।
দুই বাদীই দায়িত্ব পালনকালে মুঠোফোনে ইউটিউবে ঘুরতে ঘুরতে খাদিজাতুল কুবরা ও মেজর (অব.) দেলোয়ার হোসেনের ভিডিও দেখতে পান। তারপর দুজনই নিজ নিজ থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন।
গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারপর থেকে তিনি কারাগারে। আর দেলোয়ার বিদেশে পলাতক।
নিউমার্কেট থানার মামলায় এসআই খাইরুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ২৫ মিনিটের সময় মুঠোফোনে মেজর (অব.) দেলোয়ারের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও দেখতে পান। 'হিউম্যানিটি ফর বাংলাদেশ' শিরোনামের ভিডিওর সঞ্চালক খাদিজাতুল কুবরার উপস্থাপনায় দেলোয়ার হোসেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বৈধ গণতান্ত্রিক সরকার উৎখাতের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন।
মামলাটি রেকর্ড করা হয় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। মামলার এজাহারের সঙ্গে তিন পাতার স্ক্রিনশট ও ভিডিও–সংবলিত সিডি সংযুক্ত করা হয়।
মামলায় অভিযোগ আনা হয়, খাদিজাতুল কুবরা ও দেলোয়ার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশের বৈধ সরকারকে উৎখাতের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মনগড়া, বানোয়াট, মিথ্যা, মানহানিকর অপপ্রচার চালিয়ে আসছিলেন। আসামিরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টা সহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের প্রয়াস চালাচ্ছেন।