বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট বনাম ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ: নামে কী-ইবা আসে?
নামের অক্ষবিন্যাসের সামান্য এদিক-ওদিক আর নির্বাচনী প্রতীক- এই ছাড়া দুই দলে আর কোনো পার্থক্য আছে!
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের নির্বাচনী প্রতীক মোমবাতি; অন্যদিকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রতীক চেয়ার।
উভয়ের মধ্যে মিল বলতে, কেউই এখন পর্যন্ত কোনো আসনে জয়ী হয়নি।
দুই দলের উৎসও কিন্তু এক।
১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ১৯৯১ সালে প্রথম নির্বাচনে অংশ নেয়।
১৩ আসনে তাদের প্রার্থীরা পান ২৪ হাজারের কিছু বেশি ভোট। ১৯৯৬ সালে ২৩ প্রার্থী নিয়ে ২৩,৬৯৬ ভোট পেয়ে দলটি আবার পরাজিত হয়।
২০০১ সালের নির্বাচন আবার ভিন্ন ছিল; সেবার ২৭ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল তারা, ভোট আসে এক লাখের সামান্য বেশি। প্রার্থীরা জয়ী না হলেও তাদের ভোটব্যাংক বেড়েছে বলেই প্রতীয়মান হয়।
এত ভোট দলটি বোধহয় আর কখনোই পাবে না।
২০০৮ সালের নির্বাচন আসতে আসতে দলটি ভেঙে যায়। এর একটি শাখা ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ হয়ে ওঠে, যারা পৃথকভাবে নির্বাচনে যায়।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ১৮ জন প্রার্থী ৩২ হাজার ভোট পায়; অন্যদিকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ- মাত্র দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ভোট পায় ১,০২০।
২০১৪ সালের নির্বাচন ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ বয়কট করে; অথচ কাছাকাছি নামের অপর দলটি একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২,৫৮৫ ভোট পায়।
২০১৮ সালের নির্বাচনে প্রথম দলটি ২৫টি আসনের জন্য ৬০ হাজারের বেশি ভোট এবং অপরটি ১৮ আসনে ৩১ হাজার ভোট পায়।
বিভক্তির পর দুই দলের সম্মিলিত ভোটও ২০০১ সালের সংখ্যায় পৌঁছতে পারেনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৩৭টি এবং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ৩৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
দুই দলের জন্যই এটি রেকর্ড সংখ্যক মনোনয়ন; যদিও উভয়ই ঘোষণা করেছিল যে তারা ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে।
উভয় দলের নেতারা অবশ্য মনে করেন নির্বাচন সুষ্ঠু হলে অন্তত ২-৩টি আসন পাওয়া যাবে।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সাথে আলাপকালে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিন বলেন, "নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমাদের প্রার্থীরা ৩-৪টি আসনে জয়ী হবে। নির্বাচনী এলাকায় আমাদের দলের ৩/৪ জন প্রার্থী থাকলেও আমি সমর্থন পাব। বিগত দুই নির্বাচন নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে।"
এদিকে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের চেয়ারম্যান সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীও আশাবাদ ব্যক্ত করেন যেন মানুষ নির্বাচনে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে।