বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে দিনভর ভোগান্তি ঢাকায়, আজ বৃষ্টির সম্ভাবনা কম
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টি গতকাল বৃহস্পতিবার থাকলেও শুক্রবার বৃষ্টির সম্ভাবনা কম বলে পূর্বাভাস দেয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে দিনভর বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়েন শহরের মানুষ।
শুক্রবার বৃষ্টি না থাকলেও সারাদেশেই আকাশ মেঘলা থাকতে পারে।
৭ ডিসেম্বর সকালে দেওয়া ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘুর্ণিঝড়টি ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ টিবিএসকে বলেন, "শুক্রবার আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টির সম্ভাবনা কম।"
জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়, যা পরবর্তীতে নিম্নচাপ থেকে গভীর নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। এর প্রভাবে বুধবার রাত থেকে ঢাকা সহ সারাদেশে হালকা বাতাস এবং গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়।
বৃহস্পতিবারও সারাদিনই ঢাকাসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে হালকা ও মাঝারি মানের বৃষ্টি পড়তে দেখা যায়।
সারাদিনের বৃষ্টিতে ঢাকার মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত
অবরোধের পাশাপাশি বৃষ্টি সকাল থেকে ঢাকাবাসীদের জন্য ভোগান্তি তৈরি করেছে। এই ভোগান্তিতে সবচেয়ে বেশি পড়তে হয়েছে আফিসগামী মানুষকে। সকালে অফিস যাওয়া এবং বিকেলে বাসায় ফেরা দুই সময়েই ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
বৃষ্টির কারণে শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব, বিজয় সরণি, আসাদগেট, কারওয়ানবাজার-বাংলামোটর সড়ক সহ বিভিন্ন জায়গায় কিছুটা যানজট তৈরি হতে দেখা গেছে। বাসেও লোকজনের বাড়তি চাপ দেখা গেছে।
আবার অনেকে যারা রিকশা কিংবা সিএনজিতে করে কর্মস্থলে রওনা দিয়েছেন তাদেরকে বাড়তি ভাড়া গুণতে হয়েছে। বৃষ্টির কারণে মোটরবাইকে লোকজনের চলাফেরা ছিল সীমিত।
বিকেলে বাংলামোটর মোড়ে পাঠাও চালক শফিকুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, "সকালে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে দুটি ট্রিপ পেয়েছি। কিন্তু দুপুর থেকে বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় আর ট্রিপ পাইনি। পাঠাওয়ের যাত্রীগুলো সব বাসে অথবা সিএনজিতে চলাফেরা করছে।"
ফসলে ক্ষতির আশঙ্কা কম
এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, মাঠে এখন প্রচুর শীতকালীন সবজি রয়েছে। অনেকের আমনের পাকা ধান এখনো কাটা হয়নি। এছাড়া আলু, পেঁয়াজ, সরিষা সহ নানা ফসল রয়েছে মাঠে।
তবে কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, একদিনের বৃষ্টিতে খুব বেশি ভয়ের কিছু নেই। আলু বা পেঁয়াজের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই।
কৃষকদেরকে আগেই পরামর্শ দেয়া হয়েছে যাতে তারা জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য নালা তৈরি করে দেয়। কারণ জমিতে পানি না জমলে কোন ফসলের ক্ষতি হবে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ফিল্ড সার্ভিস উইং এর পরিচালক মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী টিবিএসকে বলেন, "আমাদের কাছে আবহাওয়ার যে তথ্য রয়েছে, তাতে করে রাতেই বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাবে। এই একদিনের বৃষ্টিতে মাঠের ফসলের কোন ক্ষতি হবে না।"
মুন্সিগঞ্জ আলু চাষের জন্য পরিচিত। এই জেলায় ১৫ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আলু রোপন করা হয়। এখন পর্যন্ত ২০-৩০% জমিতে আলু রোপন করা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, যেসব বীজ আলুর এখনো গাছ গজায়নি সেগুলোতে পানি জমে গেলে পচন ধরার সম্ভাবনা রয়েছে। এর জন্য দ্রুত নানা করে জমির পানি বের করে দিতে হবে।
জমি ভেজা থাকা অবস্থায় নতুন করে আলু না লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছেন কর্মকর্তারা।