দেশের পরিবারগুলোর গড় আয় বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে
দেশের পরিবারপ্রতি মাসিক গড় আয় গত ছয় বছরে দ্বিগুণ বেড়ে প্রায় সাড়ে ৩২ হাজার টাকা হয়েছে। আর আয়ের বিপরীতে পরিবারপ্রতি মাসে গড় ব্যয় হয় সাড়ে ৩১ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয়-ব্যয় জরিপ ২০২২-এর চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বিবিএস মিলনায়তনে প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।
জরিপ উঠে এসেছে, ২০২২ সালে দেশে পরিবারপ্রতি গড়ে আয় হয়েছে মাসে ৩২ হাজার ৪২২ টাকা। ২০১৬ সালে পরিবারপ্রতি গড় আয় ছিল ১৫ হাজার ৯৮৮ টাকা। অর্থাৎ ছয় বছরের ব্যবধানে আয় দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। আর ২০১০ সালে পরিবারপ্রতি গড় আয় ছিল ১১ হাজার ৪৭৯ টাকা।
অন্যদিকে ২০২২ সালে গড়ে পরিবারপ্রতি মাসিক ব্যয় ৩১ হাজার ৫০০ টাকা বলে উঠে এসেছে বিবিএসের জরিপ। সেই হিসাবে পরিবারপ্রতি মাসে গড়ে ১ হাজার টাকার মতো সঞ্চয় হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে পরিবারপ্রতি গড় মাসিক ব্যয় ছিল ১৫ হাজার ৭১৫ টাকা। আর ২০১০ সালের জরিপে দেখা গিয়েছিল পরিবারগুলো গড়ে মাসে ১১ হাজার ২০০ টাকা ব্যয় করেছিল।
অন্যদিকে দেশে জাতীয় পর্যায়ে পরিবারপ্রতি গড় ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৯৮০ টাকা। আর মাথাপিছু গড় ঋণ ১৭ হাজার ৩৬৬ টাকা।
২০১৬ সালের জরিপে উঠে এসেছিল, পরিবারপ্রতি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩৭ হাজার ২৪৩ টাকা। ওই সময় মাথাপিছু ঋণ ছিল ৯ হাজার ১৭৩ টাকা। সেই হিসাবে ছয় বছরের ব্যবধানে পরিবারপ্রতি এবং মাথাপিছু ঋণ বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।
জরিপ বলছে, গ্রামাঞ্চলের মানুষের চেয়ে শহরাঞ্চলের মানুষের ঋণ অনেক বেশি। জরিপের তথ্যানুসারে, শহর এলাকায় প্রতি পরিবার গড়ে ঋণ নিয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৫৬ টাকা। অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে প্রতি পরিবার ঋণ নিয়েছে ৪৪ হাজার ৪১১ টাকা। সেই হিসাবে শহরের পরিবারগুলোর ঋণ গ্রামের পরিবারগুলোর চেয়ে তিনগুণ বেশি।
বিবিএসের জরিপ বলছে, দেশে দারিদ্র্য কমা সত্ত্বেও গত ছয় বছরে আয় বৈষম্য উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।
জরিপে উঠে এসেছে, ২০২২ সালে জাতীয় পর্যায়ে গিনি সহগ ছিল ০.৪৯৯—গ্রামীণ এলাকায় ০.৪৪৬ ও শহরাঞ্চলে ০.৫৩৯।
গিনি সহগ (গিনি ইনডেক্স বা গিনি রেশিও) হচ্ছে একটি দেশের অর্থনৈতিক বৈষম্যের পরিসংখ্যানগত পরিমাপ। কোনো দেশের বৈষম্য যখন গিনি সহগ অনুযায়ী ০.৫০০ হয়, তখন ওই দেশটি উচ্চমাত্রার বৈষম্যে ভোগে।
০.৪৯৯ গিনি সহগ নিয়ে বাংলাদেশ এখন উচ্চমাত্রার বৈষম্যের কাছাকাছি রয়েছে।
২০১৬ সালে দেশে জাতীয় পর্যায়ে গিনি সহগ ০.৪৮২—গ্রামীণ এলাকায় ০.৪৫৪ ও শহরাঞ্চলে ছিল ০.৪৯৮।
আর ২০১০ সালে দেশে জাতীয় পর্যায়ে গিনি সহগের মান ছিল ০.৪৫৮—গ্রামীণ এলাকায় ০.৪৩১ ও শহরাঞ্চলে ছিল ০.৪৫২।