জনগণের সরাসরি ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন চান প্রায় ৮৩% মানুষ: জরিপ
জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় ৮৩ শতাংশ মানুষ। আর ১৩ শতাংশ মানুষ সংসদ সদস্যদের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত এক জনমত জরিপে এসব মতামত উঠে এসেছে।
দেশের নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন তাদের সংস্কার প্রস্তাব তৈরির লক্ষ্যে গত ২০-২২ ডিসেম্বর বিবিএসের মাধ্যমে জরিপটি চালায়। এতে ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ মতামত প্রকাশ করেছেন। ইতোমধ্যে জরিপটির খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
এছাড়াও, জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৬৯ শতাংশ মানুষ মত দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি পদে নির্দলীয় ব্যক্তিকে দেখতে চান তারা। অন্যদিকে প্রায় ২৯ শতাংশ মানুষ দলীয় ব্যক্তিকে দেশের রাষ্ট্রপতি পদে দেখতে চান।
জরিপে উঠে এসেছে, রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন থাকার বিষয়টি সমর্থন করেন না ৬৩ শতাংশ মানুষ এবং প্রায় ৩১ শতাংশ এটিকে সমর্থন করেন। প্রায় ৫ শতাংশ বলেছেন, এ বিষয়ে তারা জানেন না।
জরিপে নির্বাচনে মনোনয়ন–বাণিজ্য রোধে প্রধান দায়িত্ব কার বলে মনে করেন, তা জানতে চাওয়া হয়।
এখানে অংশ নেওয়া ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, এই দায়িত্ব রাজনৈতিক দল বা তাদের প্রার্থীর বলে মনে করেন তারা। অন্যদিকে, ৪৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ বলেছেন, এই দায়িত্ব জনগণের।
নির্বাচনে 'না' ভোট জয়ী হলে পরাজিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ। এর বিপক্ষে ছিলেন প্রায় ১৭ শতাংশ।
নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পক্ষে মত দেন প্রায় ৪৭ শতাংশ উত্তরদাতা, আর ৪৪ শতাংশ জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা করার পক্ষে মত দেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোট ৫০ শতাংশের কম হলে ওই আসনে পুনর্নির্বাচনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ এবং বিপক্ষে মত দেন ১৭ শতাংশ।
নির্বাচনে 'না' ভোট জয়ী হলে পরাজিত প্রার্থীদের বাদ দিয়ে নতুন নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দেন ৭৮ শতাংশ মানুষ এবং এর বিপক্ষে ছিলেন প্রায় ১৭ শতাংশ। সংস্কার কমিশন তাদের সুপারিশে এটি রেখেছে।
জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন ১০০টিতে উন্নীত করে নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকা থেকে সরাসরি ভোটে নির্বাচনের পক্ষে মত দেন প্রায় ৭৪ শতাংশ এবং প্রায় ২০ শতাংশ ছিলেন এর বিপক্ষে।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্রসংগঠন থাকার বিষয়টি সমর্থন করেন না ৬৩ শতাংশ মানুষ। আর প্রায় ৩১ শতাংশ এটিকে সমর্থন করেন।
বিদেশে রাজনৈতিক দলের শাখা রাখার বিষয়টিকে সমর্থন করেন না ৫০ শতাংশ উত্তরদাতা; আর ৪২ শতাংশ উত্তরদাতা বিদেশে দলের শাখা থাকার বিষয়টিকে সমর্থন করেন। ৮৭ শতাংশ মানুষ প্রবাসীদের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ইলেকট্রনিক ভোট আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন।
জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় করার পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় ৭০ শতাংশ। আর দলীয় প্রতীকে এই নির্বাচন করার কথা বলেছেন প্রায় ২৮ শতাংশ।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদের সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের সব স্তরের নির্বাচন করার পক্ষে মত দেন ৬৫ শতাংশ মানুষ।