গরিব লোকেরা দেশে বেশি পয়সা পাঠায়, শিক্ষিতরা কম পাঠান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
দেশে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ নিয়ে আক্ষেপ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দরিদ্র লোকেরাই (শ্রমিক) দেশে বেশি রেমিট্যান্স পাঠালেও, প্রবাসে বসবাসরত শিক্ষিতরা টাকা-পয়সা কম পাঠান।
শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে দেওয়া বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের লোকেরা তাদের পরিবারের জন্য দেশে টাকা পাঠায়। সেই সুযোগে সরকার রেমিট্যান্স পায়। তবে রেমিট্যান্স খুব বেশি না। রেমিট্যান্স প্রেরণে আমরা সপ্তম। আমাদের চেয়ে অনেক অল্পসংখ্যক লোকের দেশ ফিলিপিন (৪০ বিলিয়ন ডলার) কিংবা মেক্সিকো (৬৭ বিলিয়ন ডলার) অনেক রেমিট্যান্স পাঠায়। ভারত রেমিট্যান্সে সর্বোচ্চ (১২৫ বিলিয়ন ডলার)। রেমিট্যান্সে আমরা অনেক কম। এর একটি বড় কারণ হচ্ছে, আমাদের যেসব প্রবাসী যাচ্ছেন তাদের বিরাট সংখ্যক দক্ষতাসম্পন্ন নন।'
মোমেন বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের মাত্র দেড় শতাংশ প্রবাসী আছেন, যারা দক্ষ। কিন্তু এই গরিব লোকেরাই বেশি পয়সা পাঠান। যারা একটু শিক্ষত, তারা টাকা-পয়সা কম পাঠান।'
প্রবাসীদের সেবা দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন সময়ে উঠে আসা অভিয়োগ নিয়েও কথা বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রায়ই অভিযোগ করা হয় পাসপোর্ট দিতে দেরি করছে, অভিযোগ করা হয় এনআইডি তারা পান না। অভিযোগ করা হয়, অনেক প্রবাসী বিদেশে গিয়ে দেখেন চাকরি নাই। মধ্যপ্রাচ্য থেকে চাকরির অভাবে ২৫ শতাংশ ফিরে আসেন। কিন্তু এগুলোতে সব দায়দায়িত্ব দেওয়া হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে।
মোমেন বলেন, 'পাসপোর্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইস্যু করে না। পররাষ্ট্র শুধু তথ্য বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেয়। তারা (স্বরাষ্ট্র) যাচাই-বাছাই করে পাসপোর্ট তৈরি করে। যখন তারা (স্বরাষ্ট্র) তৈরি করে, পররাষ্ট্র সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিতরণ করেন। কিন্তু বাজারে কথা আছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাসপোর্ট দিতে দেরি করে।'
কর্মীদের বিদেশ গিয়ে চাকরি না পাওয়ার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, 'বিদেশে গিয়ে অনেক চাকরি পান না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চাকরি জোগাড় করে না। বিএমইটি (জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো) আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানাত, এরকম একটা কোম্পানি থেকে চাহিদা এসেছে, ওদের যাচাই-বাছাই করা দরকার। সম্প্রতি এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খবরই দেয় না তারা। তারপর আমরা জানি না, এটা ভুয়া কোম্পানি নাকি, তার কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ হতে হবে।'
প্রবাসে অবস্থানরত অনেক বাংলাদেশি দেশের বিরুদ্ধে কবানোয়াট তথ্য প্রচার করেন বলেও অভিযোগ করেন মোমেন। তিনি বলেন, শান্তি ও স্থিতিশীলতা থাকায় দেশের উন্নয়ন হয়েছে। যেসব দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নেই, সেসব দেশ বড় কষ্টে আছে।