কাল শপথ নিচ্ছে না জাতীয় পার্টি
জাতীয় পার্টির (জাপা) নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আগামীকাল বুধবার (১০ জানুয়ারি) শপথ নেবেন না বলে দলটির একাধিক সূত্র জানিয়েছে। কয়েকদিন সময় নিয়ে শপথ নেওয়ার দিন-তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে দল থেকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সময় চেয়ে স্পিকার বরাবর দল থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নেবেন বুধবার। এদিন সকাল ১০টায় জাতীয় সংসদের শপথকক্ষে তাদের শপথ পড়াবেন একাদশ সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এবারের নির্বাচনে জাপা ১১টি আসনে জয় পেয়েছে।
ফেনী-৩ থেকে নির্বাচিত জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ''শপথের জন্য সময় নিয়ে স্পিকার বরাবর একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। দলের অধিকাংশ নেতা ঢাকার বাইরে থাকায় এবং দলের মিটিং শেষে শপথ নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।''
তিনি আরও বলেন, ''শপথ গ্রহণের সংবাদ পেয়ে আমি রওনা দিয়েছি ঢাকার উদ্দেশে। এখন শপথ নেব কিনা দল সে সিদ্ধান্ত নেয়নি।''
বরিশাল-৩ থেকে নির্বাচিত জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু টিবিএসকে বলেন, ''আমি সংবাদ পেয়েছি কাল শপথ গ্রহণ, তাই আজ রওনা দিয়েছি ঢাকার উদ্দেশে। শপথ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না আমার তা জানা নেই। দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সে অনুযায়ীই আমরা শপথ নেব।''
জাপা নির্বাচনে অংশ নিয়ে ২৬ টি আসনে ছাড় পেয়েও মাত্র ১১ টি আসনে জয়লাভ করে। আর ২৬৫ টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ভোট ব্যবধানে দ্বিতীয় হয়েছেন মাত্র ৬৭ জন প্রার্থী।
একাদশ সংসদে জাতীয় পার্টির আসন সংখ্যা ছিল ২২টি।
এবারের নির্বাচনে বেসরকারিভাবেপ্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, জাপার চেয়ারম্যান জিএম কাদের (রংপুর-৩), মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু (কিশোরগঞ্জ-৩), কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (চট্টগ্রাম-৫) ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার (পটুয়াখালী-১) জয়ী হয়েছেন।
এই চার জ্যেষ্ঠ নেতার বাইরে প্রেসিডিয়াম সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী (ফেনী-৩), হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (ঠাকুরগাঁও-৩), গোলাম কিবরিয়া (বরিশাল-৩), এ কে এম সেলিম ওসমান (নারায়ণগঞ্জ-৫), মো. আশরাফুজ্জামান (সাতক্ষীরা-২), এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান (কুড়িগ্রাম-১) ও শরিফুল ইসলাম (বগুড়া-২) নির্বাচিত হয়েছেন।
৭ জানুয়ারি ভোট শেষে জি এম কাদের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
তবে পরদিন তিনি বলেন, নির্বাচন 'সঠিক' হয়নি। এটি সরকারের ইচ্ছানুযায়ী একটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন ছিল। এই সরকারকে কেউ বিশ্বাস করবে না, সরকারের গ্রহণযোগ্যতা যেটা ছিল, সেটাও থাকবে না।
সরকার যা ইচ্ছা তা করছে: জিএম কাদের
সরকার যা ইচ্ছা তা করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
তিনি বলেন, যে নির্বাচন হয়েছে সেখানে জাপার কোনো সিট পাওয়ারই কথা ছিল না। সেখানে যে কয়েকটা পাওয়া গেছে, তার মানে আমাদের অস্তিত্ব আছে। প্রমাণ হলো আমরা যারিয়ে যাইনি। তবে সঠিক নির্বাচন হলে অনেক বেশি সিট পাওয়ার কথা ছিল।
মঙ্গলবার রংপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন জাপা চেয়ারম্যান কাদের।
জিএম কাদের বলেন, আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতা ছেড়ে দেয়, প্রশাসন ঢেলে সাজায় এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন করে, দেখবেন আওয়ামী লীগ কয়টি আসন পায়।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের জনগণের পাশে ছিলাম। সরকার জনগণের সঙ্গে থাকায় আমরাও তার সঙ্গে ছিলাম। এখন আমরা মনে করি না সরকার জনগণের পাশে আছে। তাই আমরাও সরকারের সঙ্গে নেই।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন থেকে আমাদের দলে যত ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করা, দলীয় কোন্দল সৃষ্টি করা; সব আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা আমাদের ভিতরে ঢুকে করেছে। আমাদের দুর্বল করার চেষ্টা করেছে তারা। কিন্তু আমি এবার নির্বাচনে এসে দেখলাম, জাপা মোটেই দুর্বল নয়।