পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখবেন নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গত সংসদে তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন হাছান মাহমুদ। নতুন মন্ত্রীসভায় তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের সরকারে কিছুদিনের জন্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
তবে নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে অপেক্ষা করছে পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে চলার চ্যালেঞ্জ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক অঙ্গন দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। চীন, ভারত, জাপান, রাশিয়া নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আওয়ামী লীগকে অভিনন্দন জানিয়েছেন; অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, যুক্তরাজ্য, কানাডা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদের জন্য নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করা কঠিন পরীক্ষা হবে।
বাণিজ্য অগ্রাধিকার ধরে রাখতে এবং নতুন বাজার অন্বেষণের জন্য নতুন সরকারের পররাষ্ট্রনীতিতে বাণিজ্য কূটনীতির ওপর বেশি জোর দেওয়ার কথা।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারেও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউ, জাপান, কানাডাসহ অন্যান্য উন্নত দেশের সঙ্গে উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদার ও বৈচিত্র্যময় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিশেষ করে বাণিজ্য, জ্বালানি ও উন্নয়ন অর্থায়নের জন্য ভারত, চীন ও রাশিয়ার ওপর সরকারের নির্ভরতা ক্রমেই বাড়ছে।
বাণিজ্য, ট্রানজিট, নিরাপত্তা, জ্বালানি অংশীদারত্ব এবং ন্যায্য পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি।
জলবিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অভিন্ন নদী অববাহিকার যৌথ ব্যবস্থাপনার জন্য ভারত-নেপাল-ভুটানের সঙ্গে সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে আওয়ামী লীগ।
আসিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করে দলটি তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলেছে, 'বাংলাদেশ উন্নয়ন অর্থায়নের ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী। প্রাথমিকভাবে সরকার জ্বালানি খাত সম্প্রসারণের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে শক্তিশালী বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে কাজ করবে।'
পররাষ্ট্রনীতিতেও বাণিজ্য কূটনীতির দিকে নজর দেওয়া হয়েছে, কারণ আওয়ামী লীগ সরকারের এই মেয়াদে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পরও কোটা সুবিধা অব্যাহত রাখতে গ্রেস পিরিয়ড পাওয়ার জন্য ইইউ, যুক্তরাজ্যসহ অন্যদের সঙ্গে আলোচনায় যুক্ত হওয়ার প্রতিশ্রুতিও রয়েছে আওয়ামী লীগে। ভারত, জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য-সংক্রান্ত চুক্তিগুলোকে শক্তিশালী করার জন্যও আলোচনায় যুক্ত হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি।
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বলা হয়েছে, সরকার পণ্যবৈচিত্র্যের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। পাশাপাশি পণ্য রপ্তানি ২০২২-২৩ সালের ৫৫.৬ বিলিয়ন ডলার থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর জন্য নতুন বাজার খুঁজে বের করবে।
এছাড়া কৃষি সামগ্রী, সামুদ্রিক খাবার, হালাল পণ্য ও পরিষেবা, হালকা প্রকৌশল পণ্য, ফার্মা ও আইটি পরিষেবাগুলোর জন্য রপ্তানি নীতি সহায়তার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে দলটি।