সৌমিত্র চৌধুরী: অ্যান্টার্কটিকায় প্রথম বাংলাদেশি সমুদ্র বিজ্ঞানী
বাংলাদেশের সমুদ্র বিজ্ঞানী সৌমিত্র চৌধুরী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মরিশাসের আরও দুই বিজ্ঞানীসহ ভারতের ৪৩তম অ্যান্টার্কটিক অভিযানে যোগ দিয়েছেন।
ভারতের গোয়ার ন্যাশনাল সেন্টার ফর পোলার অ্যান্ড ওশান রিসার্চ (এনসিপিওআর)এই অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
সৌমিত্র বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিওআরআই) বায়োলজিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগের সাইন্টিফিক অফিসার।
বিওআরআই'র সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার এবং এনভায়রনমেন্টাল ওশানোগ্রাফি অ্যান্ড ক্লাইমেট বিভাগের প্রধান আবু শরীফ মো. মাহবুব-ই-কিবরিয়া বলেন, ''তিনি প্রথম বাংলাদেশি সমুদ্র বিজ্ঞানী হিসেবে গবেষণার কাজে অ্যান্টার্কটিকায় গেছেন।''
বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালের ২০ ডিসেম্বর অ্যান্টার্কটিকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন।
বরফে ঢাকা এ মহাদেশ নিয়ে বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে তিন থেকে চার মাস বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালাবেন। তারা মেরুর অতি সুক্ষ্ম তারতম্য ও হিমায়িত পরিবেশের চ্যালেঞ্জগুলো বোঝার চেষ্টা করবেন।
ভারতের ভূ বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি) দেশগুলোর বিজ্ঞানীদের এ মহাদেশ অভিযানের সুযোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
মাহবুব-ই-কিবরিয়া বলেন,''সৌমিত্র চৌধুরী ২০২২ সালে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে যোগ দেন। আন্তর্জাতিক অভিযানের পরিকল্পনা করার সময়, তারা আমাদের এখান থেকে কাউকে পাঠাতে বলেছিল। এসময় ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক ও বর্তমানে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহমুদ বেলাল হায়দার এ জন্য সৌমিত্রকে মনোনীত করেন।''
সৌমিত্র ২০১৭ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেরিন সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালযয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান ও মৎস্যবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
২০২১ সালের মার্চ মাসে তিনি 'বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং সুনীল অর্থনীতির জন্য সামুদ্রিক শৈবাল চাষ' -শিরোনামে একটি নিবন্ধে আরও ১১ জনের সঙ্গে সহ-লেখক ছিলেন।
ভারত মহাসাগরের দেশগুলোর বিজ্ঞানীদের অংশগ্রহণে ২০২২ সালের নভেম্বরে গোয়া ও হায়দ্রাবাদে অনুষ্ঠিত প্রথম সিএসসি ওশেনোগ্রাফার ও হাইড্রোগ্রাফার সম্মেলনের ফলাফল এই অভিযান।
এর আগে ২০২৩ সালের জুন মাসে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মাসব্যাপী বৈজ্ঞানিক অভিযানের জন্য সিএসসি দেশগুলোর বিজ্ঞানীরা 'সাগর নিধি'-তে যাত্রা করেছিলেন।
কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভ (সিএসসি) ২০১১ সালে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের একটি ত্রিপক্ষীয় সামুদ্রিক নিরাপত্তা গ্রুপ হিসেবে গঠিত হয়েছিল। ভারত, মালদ্বীপ, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কা কলম্বো সিকিউরিটি কনক্লেভের বর্তমান সদস্য। বাংলাদেশ ও সেশেলস পর্যবেক্ষক দেশ। এর সচিবালয় শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে অবস্থিত।
কনক্লেভটি ইন্ডিয়ান ওশান রিজিয়নের (আইওআর) সব উপকূলীয় দেশের সঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং অভিন্ন নিরাপত্তা লক্ষ্যগুলো তুলে ধরে।
এর লক্ষ্য হলো এই অঞ্চলের জন্য সামুদ্রিক নিরাপত্তা, সামুদ্রিক দূষণ প্রতিক্রিয়া এবং সামুদ্রিক অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানকে অগ্রাধিকার দেওয়া।