সবজির দাম কিছুটা কমলেও মাছ-মাংসের দাম বেশি
সরবরাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলু ছাড়া শীতকালীন সবজির দাম কিছুটা কমেছে। তবে শুক্রবার রাজধানীর কাঁচাবাজারে মাংস ও মাছের দাম ছিল চড়া।
সবজির দাম কমলেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী হারুন অর রশীদ বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর সবজিসহ সব পণ্যের দাম তুলনামূলক বেশি।
কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারে ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, মৌসুমের এই সময়ে আলু, টমেটো ও গাজরের দাম সাধারণত প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে থাকে। কিন্তু মানভেদে এসব জিনিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজির মধ্যে।
এই অতিরিক্ত দাম অবসরপ্রাপ্ত এবং নির্দিষ্ট আয়ের গোষ্ঠীর জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা কমালে ভোক্তাদের জন্য স্বস্তি বয়ে আনছে।
তবে শুক্রবার কারওয়ান বাজারে শীতকালীন সবজির প্রায় সবগুলোই বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে আলু ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ টাকা, রসুন ২২০ টাকা, আদা ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে অসন্তোষ রয়ে গেছে মাছ ও মাংসের বাজারে। ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং সোনালি মুরগি (পাকিস্তানি জাতের) ৩২০-৩৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ দুয়েক আগে অনেক স্থানে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হওয়া গরুর মাংস এখন সর্বত্র ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি ডজন বাদামি ডিম (মুরগি) ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, সাদা ডিম ৫-১০ টাকা কম। হাঁসের ডিম প্রতি ডজন ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা এবং দেশি গৃহপালিত মুরগির ডিম প্রতি ডজন ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কয়েক মাস আগের তুলনায় এখন মাছের দাম বেশি। তবে তেলাপিয়া, পাঙ্গাস ও কার্প জাতীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে। অন্যান্য মাছের মধ্যে আড়াই কেজি থেকে দুই কেজি ওজনের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছ (চাষের) ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল ও ইলিশ মাছ কেজিতে ৬০০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।
কারওয়ান বাজারে কোরাল, বোয়াল, নদীর পাঙ্গাসের মতো বড় সাইজের মাছ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১১০০ টাকায়।
দাম বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান ইউএনবিকে বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে তার অফিস থেকে অভিযান চালানো হবে।
তিনি আরও বলেন, কয়েক মাস আগে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরকে দাম নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ ও আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন।
শফিকুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন জেলার হিমাগার পরিদর্শন করে আলুর পর্যাপ্ত মজুদ পেয়েছেন, যদিও দাম বাড়তি ছিল।
পেঁয়াজ ও আলুর উচ্চমূল্য অব্যাহত থাকলে সরকার এসব পণ্য আমদানির সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তিনি।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাংলাদেশে ভোক্তারা কঠিন সময় পার করছেন।
খামারের ডিম, ব্রয়লার মুরগি ও চাষের মাছ দেশের লাখ লাখ দরিদ্রের জন্য প্রোটিনের প্রধান উৎস।
নাজের বলেন, এ ধরনের সব পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী তাদের প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।