বিএসএমএমইউয়ে প্রথমবারের মতো সফলভাবে বোনম্যারো প্রতিস্থাপন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবগঠিত 'সেন্টার ফর ব্লাড, বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট অ্যান্ড স্টেম সেল থেরাপি'তে প্রথমবারের মতো সফলভাবে বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন হয়েছে।
এতে রক্তরোগ মাল্টিপল মাইলোমা রোগে আক্রান্ত ৬৩ বছর বয়সী এনামুল হক নামের এক রোগীর ব্যোনম্যারো প্রতিস্থাপন করা হয়।
সোমবার (৫ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বিএসএমএমইউয়ের এফ-ব্লকে 'সেন্টার ফর ব্লাড, বোনম্যারা ট্রান্সপ্লান্টেশন এন্ড স্টেম সেল থেরাপি'-সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ।
বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের কারিগরি বিষয়ে উপস্থাপন করেন হেমাটোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাউদ্দিন শাহ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএসএমএমইউয়ের এফ-ব্লকে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্থায়ীভাবে গত ১ জানুয়ারি 'সেন্টার ফর ব্লাড, বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন অ্যান্ড স্টেম সেল থেরাপি সেন্টার'- স্থাপন করা হয়। এই সেন্টারে প্রথমবারের মত সফল বোনম্যারো প্রতিস্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজারের বাসিন্দা ৬৩ বছরের এনামুল হক গত চার মাস আগে নানা শারীরিক জটিলতা নিয়ে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলোজি বিভাগ নিশ্চিত করে এনামুল হকের শরীর মাল্টিপল মায়োলোমা বা জটিল রক্তের ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত। এরপর হেমাটোলোজি বিভাগে তার চিকিৎসা শুরু করা হয়। এক পর্যায়ে চিকিৎসকেরা তার বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন।
এরপর নানা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গত ৭ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার এক পর্যায়ে তাকে অটোলোগাস বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
গত ১৭ জানুয়ারি রোগীর শরীর থেকে স্টেম সেল সংগ্রহ করা হয়। ওই দিনই রোগীর কন্ডিশনিং থেরাপি দেওয়া হয়।
গত ১৮ জানুয়ারি বিএসএমএমইউয়ের হেমাটোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সালাউদ্দিন শাহ্ রোগীর শরীরে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশন করেন। ৩০ জানুয়ারি রোগীর নিউটোফিল রিকভারি হয়। প্রতিস্থাপনের ১৮ দিন পরেও রোগীর শরীরে কোনো ধরনের জটিলতা দেখা যায়নি। তাই চিকিৎসকরা স্বাভাবিক ও ইতিবাচক এবং বোনম্যারো সফলভাবে প্রতিস্থাপন হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএসএমএমইউয়ের 'সেন্টার ফর ব্লাড, বোন ম্যারা ট্রান্সপ্লান্টেশন এন্ড স্টেম সেল থেরাপি'সেন্টারে প্রথম রোগী হিসেবে মাত্র ৩ লাখ ২২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে । দেশের বেসরকারি হাসপাতাল ভেদে এ প্রতিস্থাপনের খরচ ৬ লাখ টাকা থেকে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। বিদেশে এই ধরনের বোনম্যারো প্রতিস্থাপনের খরচ হাসপাতাল ভেদে ২০ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকা হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, সরকারের প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই সেন্টারে মাসে ৩ থেকে ৫টা বোনম্যারো প্রতিস্থাপন করা সম্ভব। বিদ্যমান সুযোগ-সুবিধায় প্রতি মাসে একটি করে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট করা সম্ভব।