গ্রীষ্মকাল আসছে: বাংলাদেশে তরমুজ উৎপাদনে শীর্ষে কোন জেলা?
২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে রেকর্ড পরিমাণ তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। এ সময়ে দেশে তরমুজের উৎপাদন ২৫.৪৭ লাখ টনে পৌঁছেছে।
এর মধ্যে পটুয়াখালী দেশের শীর্ষ তরমুজ উৎপাদনকারী জেলা। এ জেলায় মোট ৯.৬৩ লাখ টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে। এই জেলার উৎপাদন মোট জাতীয় উৎপাদনের ৩৭.৮%।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, খুলনায় মোট উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৫৯ হাজার টন তরমুজ, যা মোট উৎপাদনের ২২%।
ভোলায় উৎপাদিত হয়েছে ৫.১৩ লক্ষ টন, যা মোট জাতীয় উৎপাদনের ২০.২%।
নোয়াখালীতে ১ লাখ ৬০ হাজার টন এবং বরগুনায় ১ লাখ ৭৮ হাজার টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে, যা মোট জাতীয় উৎপাদনের ৩.১%।
বাকি ৫৯টি জেলা মিলিয়ে ২.৭৩ লাখ টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে, যা দেশের মোট তরমুজ উৎপাদনের ১০.৭%।
এ বছর পরিস্থিতি কেমন হতে পারে?
চলমান ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিভাগের ছয়টি জেলায় উচ্চ ফলনশীল তরমুজ চাষ সম্প্রসারণের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি।
এর আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৬ হাজার ৪৫১ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ করার। ওই বছর ৬৪,১৮৩ হেক্টর জমিতে ২.৭২৪ মিলিয়ন মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে।
আঞ্চলিক সরকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬১৮ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে এবং বাকি জমিতে এখনও চাষাবাদ চলছে।
তাদের তথ্য অনুযায়ী, শুধু বরিশালেই এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯৪২ হেক্টর বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে।
পিরোজপুরে ১২০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ পর্যন্ত ১৮ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
ঝালকাঠিতে ৫০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, এ বছর ইতোমধ্যে ৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৬১৮ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে এবং বাকি জমিতে এখনও চাষাবাদ চলছে।
তাদের তথ্য অনুযায়ী, শুধু বরিশালেই এ বছর তরমুজ চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে ৯৪২ হেক্টর জমিতে।
পিরোজপুরে ১২০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে এ পর্যন্ত ১৮ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
ঝালকাঠিতে ৫০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, এ বছর ইতোমধ্যে ৪০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
পটুয়াখালীতে ২৮ হাজার ৭৪৫ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৯৫৬ হেক্টর জমিতে।
বরগুনায় ১৩ হাজার ৮৩৮ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ৬১৫ হেক্টরে।
অন্যদিকে, ভোলায় ১১ হাজার ২৪৯ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৫ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
বিভাগের সবচেয়ে বেশি তরমুজ চাষকারী জেলা ভোলা ও পটুয়াখালী।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অতিরিক্ত পরিচালক শওকত ওসমান বলেন, 'চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বরিশাল বিভাগে তরমুজের ফলন বরাবরই ভালো। আমরা আশা করছি কৃষকরা বাজারে ভালো দাম পেলে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।'
তিনি মনে করেন, 'সাশ্রয়ী ও উচ্চ ফলনশীল সম্ভাবনার কারণে তরমুজ চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে।'
শওকত আরও বলেন, 'জমি প্রস্তুত থেকে মৌসুম শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রায় চার মাস সময় লাগে। তরমুজের উচ্চ উৎপাদনশীলতার ফলে অনেকে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করতে উৎসাহিত হয়েছে। আগামী চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে তরমুজ চাষ বরিশাল অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বয়ে আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।'
অন্যদিকে, গত বছর দেশের দক্ষিণাঞ্চলেও অনেক কৃষক অফসিজনে তরমুজ চাষ করেছিলেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার প্রায় ৪১ হেক্টর জমিতে প্রায় ৪০০ কৃষক অফসিজন তরমুজ চাষ করেন।
খুলনা অঞ্চলে গত বছর প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে অফসিজন তরমুজ চাষ হয়েছিল।
তরমুজ উৎপাদন বৃদ্ধি কেবল ক্রমবর্ধমান দেশীয় চাহিদাই পূরণ করে না, এটি দেশের কৃষি রপ্তানি বাড়ানোর সম্ভাবনাও তৈরি করেছে।
গত বছরের ১৪ মার্চ চট্টগ্রামের সাত্তার ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রেফার কনটেইনারে (রেফ্রিজারেটেড কনটেইনার) করে ১৩.৩২ টন তরমুজ মালয়েশিয়ায় পাঠায়, যার মাধ্যমে ৪ হাজার ডলার আয় হয়।