১১-১৭ মার্চ জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ
মৎস্যজীবী, ইলিশ ব্যবসায়ী, আড়তদার, ভোক্তাসহ সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আগামী ১১ থেকে ১৭ মার্চ জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করবে সরকার।
'ইলিশ হলো মাছের রাজা, জাটকা ধরলে হবে সাজা'- প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশের ইলিশ সমৃদ্ধ ২০টি জেলায় এই সপ্তাহ পালন করা হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রহমান আজ বুধবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
মন্ত্রী জানান, সাতদিনব্যাপী কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালন করা হবে। আগামী ১১ মার্চ চাঁদপুরের সদর উপজেলার মোলহেড প্রাঙ্গণে এই সপ্তাহের উদ্বোধন করা হবে।
প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, জাটকা রক্ষার বিদ্যমান আইন সংশোধন করে জাটকার দৈর্ঘ্য ২৩ সেন্টিমিটার থেকে ২৫ সেন্টিমিটার বা ৯ ইঞ্চি হতে ১০ ইঞ্চি করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫ লাখ ৭১ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে।
ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান অন্তরায় হচ্ছে কারেন্ট জাল, বেহুন্দি জালসহ অন্যান্য অবৈধ জাল।
চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে ৪ ধাপে ৩০ দিন দেশের ১৭টি জেলায় 'বিশেষ কম্বিং অপারেশন' চালিয়ে ৯৩১টি মোবাইল কোর্ট ও ৩৪৭৪টি অভিযান পরিচালনা করে ৭৬৬৯টি বেহুন্দি জাল, ৪৪৮ দশমিক ৭১ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং ১৯৭৪২টি অন্যান্য জাল বিনষ্ট হয়েছে বলে জানান প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।
এই সময়ে ৬৯০টি মামলা দায়ের করে ২৩ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং ১৯২ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, জাটকা নিধন প্রতিরোধ কার্যক্রমের আওতায় এ পর্যন্ত ৭৬৪টি মোবাইল কোর্ট ও ৫১৬৩টি অভিযান পরিচালনা করে ৩৩৬ দশমিক ৮৯০ লাখ মিটার অবৈধ জাল জব্দ এবং ৩৮ দশমিক ৮৮ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। জাটকা রক্ষায় দেশব্যাপী নিয়মিত অভিযান জুন মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২০ জেলার ৯৭ উপজেলায় জাটকা আহরণে বিরত ৩ লাখ ৬১ হাজার ৭১টি জেলে পরিবারকে মাসে ৪০ কেজি করে ৪ মাসে ৫৭ হাজার ৭৭১ টন ভিজিএফ চাল বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
"আমরা যে কোনোভাবে মা ইলিশকে নিরাপদ রেখে ইংলিশের উৎপাদন বাড়াতে চাই," যোগ করেন মন্ত্রী।
দাম বেশি থাকার কারণে ইলিশ মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, দাম কমাতে কোনো উদ্যোগ নেবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, "দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে এটি আপেক্ষিক প্রশ্ন।"
"ইলিশ মাছের দামের প্রশ্নে অবশ্যই দুর্বলতার দিক আছে। মধ্যসত্বভোগীদের কাছ থেকে বাজারে আসে, বাজারের মাঝখানে একটি ফড়িয়া গোষ্ঠী আছে, মধ্যসত্বভোগী আছে- এটি শুধুমাত্র এই ইংলিশের ক্ষেত্রে না, এটি সামগ্রিকভাবেই আমাদের বাজারদরের ক্ষেত্রে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদির ক্ষেত্রেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটছে," যোগ করেন মন্ত্রী।