চার দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বাড়ল ৪০ টাকা
লাগামহীনভাবে বাড়ছে ব্রয়লার মুরগির দাম। রাজধানীতে গত চার দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ৩৫-৪০ টাকা বেড়ে বর্তমানে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৫০-২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
জনপ্রিয় পোল্ট্রি ব্রয়লার হাউজের মালিক মো আমিনুল ইসলাম বলেন, 'কি করব আমরা, আমাদের পাইকারি কিনতে হয় ২৩৫ টাকা কেজিতে। গরমে মুরগি মারা যায়। এছাড়া আমাদের দোকান ভাড়া আছে, কর্মীদের বেতন দিতে হয়। এর কম বিক্রি করলে লাভ থাকে না।'
তিনি বলেন, 'গত চারদিনে কেজিতে প্রায় ৪০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম।'
আমিনুল ইসলাম বলেন, 'বাজারের চাহিদার তুলনায় মুরগির সরবরাহ কম, তাই দাম বাড়তি। পাইকারিতে দাম বেড়েছে, তাই খুচরাতে এর প্রভাব পড়েছে।'
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, গত বছর এ সময় ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল প্রতি কেজি ১৯০ টাকা।
খুচরা বাজারে মাছ, মাংস, ডিম, ডাল ও সবজির মতো ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকারের কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
গত মার্চের মাঝামঝিতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিমের সই করা এ–সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কৃষি বিপণন আইন ২০১৮ এর ৪(ঝ) ধারার ক্ষমতাবলে কতিপয় নিত্যপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হলো। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত দামে কৃষিপণ্য ক্রয়–বিক্রয়ের অনুরোধ করা হলো।
সেখানে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ১৪৫ টাকা ৭৮ পয়সা। উৎপাদক পর্যায়ে দাম ১৫১ টাকা ৮১ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১৬২ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৭৫ টাকা ৩০ পয়সা। তবে এই দামে কোথাও বিক্রি হচ্ছে না।
একইভাবে গরুর মাংসের উৎপাদন খরচ ৫৮৭ টাকা ৫০ পয়সা। উৎপাদক পর্যায়ে দাম প্রতি কেজি ৬০৫ টাকা ১৩ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ৬৩১ টাকা ৬৯ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ৬৬৪ টাকা ৩৯ পয়সা।
তবে আজকে কারওয়ান বাজারে দেখা গেছে, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজি।
এ দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক বলছেন ভোক্তারা।
মনোয়ার হোসেন কারওয়ান বাজার থেকে দেড় কেজি ওজনের একটি মুরগি কিনেছেন।
তিনি বলেন, 'আমরা জিম্মি হয়ে গেছি। এই রমজানে মাত্র একদিন মুরগি কিনেছিলাম। ঈদের জন্য মুরগি কিনব, ভাবলাম কারওয়ান কাজারে কম দাম হবে। এখানেও কেজি ২৫০ টাকা।'
তিনি বলেন, 'আমরা সংসার চালাব কীভাবে। চার জনের সংসারে ঘর ভাড়া, খাবার খরচ; অথচ মাসে বেতন ২৫ হাজার টাকা। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা মানছে না। নিম্ন আয়ের লোকদের কথা চিন্তা করে হলেও সরকারের বাজার মনিটরিংয়ে জোর দেওয়া প্রয়োজন।'
তিনি আরও বলেন, 'গরুর মাংসের দামতো অনেক আগেই আমাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। যা দেখছি সামনে মুরগিরও কিনতে পারব না।'