ঈদের দিন রাজধানীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে উপচে পড়া ভিড়
ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আব্দুল মান্নান। বিগত বছরগুলোতে গ্রামের বাড়িতে বাবা-মাকে নিয়ে ঈদ উদযাপন করলেও এবার চাকরির কারণে যেতে পারেননি। স্ত্রী-সন্তানদের ঢাকায়ই ঈদ উদযাপন করছেন তিনি। দুপুরের মধ্যে সব কাজ শেষ করে বিকালে স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে হাতিরঝিলে বেড়াতে এসেছেন।
কথা হয় আব্দুল মান্নানের সঙ্গে। তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "গ্রামের ঈদের সাথে ঢাকার ঈদের অনেক পার্থক্য। এবারের ঈদে পরিবার সাথে থাকলেও মা, বাবা ও প্রতিবেশীদের কথা মনে পড়ছে। তবে সন্তানরা সাথে আছে বলে তেমন কষ্ট হচ্ছে না।"
তিনি আরও বলেন, "ঢাকার ঈদের আমেজ পুরোই ভিন্ন। এখানে ঈদ উদযাপন পুরোটাই নিজেদের মতো করে। তাই নিজের পরিবারকে সময় দিতেই ঘুরতে বেড়িয়েছি। আমাদের ঈদ মানে ঘোরাঘুরি শেষে বাসায় গিয়ে একটু ভালোমন্দ খাবো। বাইরে দামি রেস্টুরেন্টে পরিবারসহ খাওয়ার মতো খরচ মেটাতে হয়তো পারব না।"
আগারগাঁও বিমানবাহিনী জাদুঘরে পরিবারের সাথে ঘুরতে এসেছে ৩য় শ্রেণির শিক্ষার্থী আয়ান। সে বলে, "আমি বাবা-মার সাথে এসেছি বিমানে চড়ব বলে। এবার ঈদে নানু বাড়িতে যাওয়া হয়নি। বিমানে চড়বো, মাঠে দৌড়াবো, আইসক্রিম খাবো।'
শুধু হাতিরঝিল কিংবা বিমানবাহিনী জাদুঘরেই নয়, আজ বৃহস্পতিবার ঈদের দিনে রাজধানীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে দুপুরের পর থেকেই উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।
ঈদের নামাজ শেষে অনেকেই পরিবার নিয়ে ও বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বের হন। পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা মেতে ওঠেন ঈদের আনন্দে।
ঈদের দিন আবহাওয়া কিছুটা সহনীয় থাকায় তারা স্বস্তির কথা জানিয়েছেন।
চন্দ্রিমা উদ্যানে শিপন নামে এক ব্যক্তি বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। তিনি টিবিএসকে বলেন, "বন্ধুরা ঈদের নামাজ শেষে বাইক নিয়ে বের হয়েছি। প্ল্যান করেছি সারাদিন ঘুরব। রাতে ঘুরাঘুরি শেষে এক বন্ধুর বাসায় রান্নার আয়োজন হচ্ছে, সেখানে সবাই যাব। গ্রামের সবাইকে মিস করলেও শহরের বন্ধুদের সাথে আড্ডা এ আনন্দে কমতি রাখেনি।"
হাতিরঝিলে বোটের স্পেশাল ট্রিপ
ঈদকে কেন্দ্র করে হাতিরঝিলের ওয়াটার বাসগুলোর স্পেশাল সার্ভিস চলছে। প্রতিটি ঘাট থেকেই ৩০ মিনিটের জন্য যাত্রীদের ঘুরিয়ে আবার সেখানে নামিয়ে দিচ্ছে প্রতিজন ৮০ টাকার প্যাকেজে।
পরিবারসহ হুমায়রা ওয়াটার বাসে চড়েছিলেন। তিনি টিবিএসকে বলেন, "ঢাকায় আর বেড়ানোর জায়গা কোথায়? দুয়েকটি জায়গাই আছে যেখানে পরিবাসহ একটু ঘোরাঘুরি করা যায়। বাচ্চাদের নিয়ে নৌকায় চড়েছি ওরা খুব আনন্দ পেয়েছে। গ্রামের আনন্দ দিতেই ওদের নৌকাতে চড়াতে নিয়ে এসেছি।"
হাতিরঝিল এফডিসি গেইটের বোটের টিকিট বিক্রেতা মো. রাকিব হোসেন বলেন, 'সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত এই কাউন্টার থেকে দুই হাজারেরও বেশি যাত্রী ভ্রমণ করেছেন। এবারের ভিড় গত বছরের থেকে অনেক বেশি।
কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্টের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অনুপ কুমার সরকার টিবিএসকে বলেন, "এ বছর গত বছরের থেকে দর্শনার্থী ও ভিজিটরদের উপস্থিতি বেশি। আমাদের ফ্যান্টাসি কিংডম দুপুরে খুলেছি। খোলার পর থেকেই দর্শনার্থী বাড়তে থাকে। আগামীকাল উপস্থিতি আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা করছি।"