শ্রীমঙ্গলে আকস্মিক বৃষ্টির পর বাসা থেকে পড়ে যাওয়া বাবুই ছানা যেভাবে উদ্ধার পেল
২৮ এপ্রিল আকস্মিক ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে যাওয়ায় দেখা দেয় বিদ্যুৎবিভ্রাট।
শ্রীমঙ্গলে ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যায় প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে।
ঝড়ের তাণ্ডবে শ্রীমঙ্গলের গাছপালাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে অনেক গাছও উপড়ে যায়।
এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্থানীয় এক চা বাগানের গাছগুলোতে বোনা বাবুই পাখির বাসাও। স্থানীয়রা তখন স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন 'স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এনডেঞ্জাজারড ওয়াইল্ডলাইফ'-এর (এসইডব্লিউ) সঙ্গে যোগাযোগ করে।
ঘটনাস্থলে ছুটে যান এসইডব্লিউয়ের সদস্য ও ফটোগ্রাফার খুকন থানৌজাম। গিয়ে দেখেন পাঁচটির মতো বাসা পড়ে রয়েছে মাটিতে। ভেতরে প্রায় ১৫টি বাবুই ছানা। খুকন ও স্থানীয়রা অবশ্য ৮টি ছানা উদ্ধার করতে পারেন।
ছানাগুলোর মধ্যে দুটি একটু বড় হয়েছে, বাকি ছয়টির এখনও চোখ ফোটেনি। খুকন সেগুলোকে বাড়িতে নিয়ে যান।
খুকন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'বাড়ি ফিরে যেসব পাখির এখনও শক্ত খাবার খাওয়ার বয়স হয়নি, সেগুলোকে সিরিঞ্জের মাধ্যমে চাল, ডাল ও ডিম মেশানো খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। আজ পর্যন্ত মধ্যে তিনটি ছানার চোখ ফুটেছে। বড় দুটি আরেকটু বড় হয়েছে।'
তিনি জানান, পাখিগুলো উড়তে এবং খাবার খুঁজতে শেখার পরে তাদের বনে অবমুক্ত করা হবে।
তার সংগঠন সম্পর্কে খুকন বলেন, এসইডব্লিউ ২০১৮ সালে চালু হয়। এ পর্যন্ত তারা ৩০০ থেকে ৩৫০-র মতো প্রাণী উদ্ধার করেছেন। শ্রীমঙ্গলে বাবুই পাখির সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে আসছে।
'আমি যখন বড় হচ্ছিলাম, তখন নারকেল ও সুপারি গাছে বাবুইদের অনেক বাসা দেখতে পেতাম। কিন্তু এখন এরকম বাসা খুব কম চোখে পড়ে,' বলেন তিনি।
খুকন বলেন, গাছের সংখ্যা যে খুব কমেছে, তা নয়। তবে আমাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, পাখির জনসংখ্যা কমেছে,' বলেন তিনি।