টেকনাফে মহাবিপন্ন হিমালয়ান গ্রিফন শকুন উদ্ধারের পর সাফারি পার্কে হস্তান্তর
কক্সবাজারের টেকনাফে একটি মহাবিপন্ন প্রজাতির শকুন উদ্ধারের পর চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের ডেইলপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমের বসতঘরের আঙিনা থেকে শকুনটি উদ্ধার করে উপকূলীয় বন বিভাগ।
পরে মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে শকুনটিকে পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা বশির আহমেদ খান।
তিনি জানান, 'এটি মহাবিপন্ন একটি হিমালয়ান গ্রিফন শকুন। এর বৈজ্ঞানিক নাম জিপস হিমালয়েনসিস (Gyps himalayensis)।'
ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কের ইনচার্জ মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, 'শকুনটিকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ১৪ দিন এর সবকিছু নজরদারিতে রাখা হবে। এরপর এটি নিজে নিজে চলাফেরা করতে পারলে অবমুক্ত করা হবে।'
বশির আহমেদ বলেন, 'সোমবার সন্ধ্যার দিকে একঝাঁক শকুন উড়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ একটি শকুন উড়ে এসে মোহাম্মদ আলমের বাড়ির একটি গাছে বসে। কিছুক্ষণ পর শকুনটি গাছ থেকে পড়ে যায়।'
পরে বন বিভাগে খবর দিলে তারা শকুনটি উদ্ধার করে উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যায়। শকুনটি আহত কি না তা দেখার জন্য টেকনাফ প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের উপসহকারী কর্মকর্তা হারাধন চন্দ্র সুশীল বলেন, 'এটি একটি পুরুষ শকুন। কোনো কারণে উড়তে না পারায় দলছুট হয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। তবে পাখিটির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।'
তিনি আরও জানান, প্রায় ২০ কেজি ওজন ও দুই ফুট উচ্চতার শকুনটির বয়স ১৫–২০ বছর হতে পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ জানান, 'আগে শীত মৌসুমে শকুন দেখা যেত। তখন গরু-মহিষ বা ছাগল মারা গেলে মাঠে ফেলে রাখা হতো। দলবেঁধে মরা পশু খেতে আসত শকুন। কিন্তু ২৫–৩০ বছর ধরে এলাকায় আর শকুনের দেখা মেলে না। এ ছাড়া গবাদিপশু মারা গেলে এখন কেউ আর মাঠে ফেলে রাখে না, মাটিচাপা দেয়।'