টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনায় চালু হলো ‘ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ড’
দ্রুততম সময়ে নীতি-পরিকল্পনা গ্রহণ ও গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য যাতে সহজে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিষয়ক সব তথ্য সবাই পেতে পারে— সেজন্য বাংলাদেশ ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ড (বিডিএফএসডি) চালু করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
খাদ্যশস্যের উৎপাদন, মজুত, আমদানি, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক মূল্য বিশ্লেষণ, অপুষ্টির হার, স্থুলতা, অসংক্রামক রোগের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত ডিজিটাল পদ্ধতিতে উপস্থাপন করা হয়েছে এই ড্যাশবোর্ডে।
রোববার (১২ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইম্প্রুভড নিউট্রিশনের (জিএআইএন— গেইন) সহযোগীতায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ফুড প্ল্যানিং অ্যান্ড মনিটরিং ইউনিট (এফপিএমইউ) আয়োজিত অনুষ্ঠানে ড্যাশবোর্ডটির উদ্বোধন করেন খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন। খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) নির্দেশনায় বাংলাদেশ ফুড সিস্টেমস ড্যাশবোর্ডটি পরিচালিত হচ্ছে।
এফপিএমইউ বলছে, তথ্যের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), এফপিএমইউ এবং গেইনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়েছে। এই ড্যাশবোর্ডটিকে বাংলাদেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অর্জনের অগ্রগতি মনিটরিং এবং খাদ্য-পুষ্টি সংক্রান্ত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে উপযুক্ত টুল হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
খাদ্য সচিব মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, "ড্যাশবোর্ডের উদ্দেশ্য হল বাংলাদেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা সম্পর্কিত সকল তথ্য ডিজিটাইজ করা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা। যাতে সবার তথ্য উপাত্তের অধিকার নিশ্চিত করা যায়। এই ড্যাশবোর্ড, নীতিমালা প্রণয়ন ও গবেষণার কাজকে সহজ করবে।"
তিনি বলেন, "ফুড ড্যাশবোর্ডর মাধ্যমে দেশের যেকোনো স্থান থেকে খাদ্য ব্যবস্থাপনার চিত্র সহজেই জানা যাবে। পাশাপাশি বিভাগ ও জেলার চিত্রও আলাদা করে জানা যাবে, যা খাদ্য গবেষণা এবং খাদ্য বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কাজে লাগবে।"
ড্যাশবোর্ডে বাংলাদেশের বিভিন্ন সূচকের সঙ্গে অন্য দেশের সূচকের তুলনামূলক চিত্রও পাওয়া যাবে।
অনুষ্ঠানে এফপিএমইউ এর ডিরেক্টর জেনারেল মো. শহিদুল আলম বলেন, "আমাদের বিভিন্ন তথ্য নিয়ে অনেক সময় প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। কিন্তু এখানে যে ডাটা উপস্থাপন করা হয়েছে, সেটি বিবিএস বা সরকার কর্তৃক অনুমোদিত হবে, যার স্বচ্ছতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ থাকবে না।"
অনুষ্ঠানে গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রুদাবা খন্দকার বলেন, "নীতি এবং খাদ্য ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন শাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তথ্যউপাত্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই, ন্যায়সঙ্গত এবং স্থিতিস্থাপক খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরের দিকে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রদর্শনের জন্য ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ড অন্যতম কার্যকরী হাতিয়ার।"
https://www.foodsystemsdashboard.org/countries/bgd — এই লিঙ্কে পাওয়া যাবে বাংলাদেশের সমস্ত তথ্য। এই ড্যাশবোর্ডে অবশ্য বিশ্বের অনেক দেশেরও তথ্য রয়েছে।
কেনিয়া, নাইজেরিয়া, মোজাম্বিক, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়াসহ বিশ্বের ছয়টি দেশে একই ধরনের ড্যাশবোর্ড চালু রয়েছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের উদ্যোগে ইউএন ফুড সিস্টেম সামিট অনুষ্ঠিত হয়। এর একটি উদ্যেশ্য ছিল খাদ্য নিরাপত্তার বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ যেমন— ক্ষুধা, অপুষ্টি, জলবায়ুর পরিবর্তন, অস্থিতিশীলতা, মোকাবেলার জন্য একটি সম্মিলিত কর্মকৌশল প্রণয়ন করা। তারই ধারবাহিকতায় এই ড্যাশবোর্ড।
এসডিজির গোলগুলো কতটুকু পূরণ হচ্ছে, তারও সূচক প্রদান করবে ড্যাশবোর্ডটি।