বয়সসীমা লঙ্ঘন: ভিকারুননিসার ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল
বয়সসীমা না মেনে ভর্তির অভিযোগে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণির ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিল বহাল থাকবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাতিল হওয়া আসনগুলোতে ওয়েটিং লিস্ট থেকে আসন পূরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ভর্তি বাতিল হওয়াদের অনলাইন সিস্টেমে আবেদন ও ভর্তির ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম ছিল কি না, তা তদন্তের নির্দেশ দিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের একজন প্রতিনিধি ও বুয়েটের একজন আইটি এক্সপার্টকে রাখতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ মে) এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদন নিষ্পত্তি করে বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম সরদার এবং ১৬৯ শিক্ষার্থীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান এবং ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রায়ে আদালত বলেছেন, ১৬৯ শিশুর ভর্তি নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, অভিভাবকরাও এর দায় এড়াতে পারেন না।
ভিকারুননিসায় ভর্তি নিয়ে বয়সসীমা না মানার অভিযোগ এনে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু দুই শিক্ষার্থীর মা গত ১৪ জানুয়ারি রিট করেন। তাদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট বয়সের বাইরে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে স্কুলেটিতে।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) একটি স্মারক হাইকোর্টে উপস্থাপন করে।
মাউশির ওই আদেশ মতে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা অনুসরণ করেনি।
১ জানুয়ারি ২০১৭ সালের আগে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার প্রক্রিয়া ছিল বিধিবহির্ভূত। এসব ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ১০ জন ও ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫৯ জন। এসব শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে শিগগিরই মাউশিকে অবহিত করার অনুরোধ করা হলো।
এরপর স্কুল কর্তৃপক্ষ ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করে। ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের পর এখন অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে শূন্য আসনে ভর্তি নিতে গত ৬ মার্চ নির্দেশ দেন হাইকোর্ট
ওই আদেশের বিরুদ্ধে ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর অভিভাবক আপিল বিভাগে আবেদন করেন। গত ২০ মার্চ আপিল বিভাগ হাইকোর্টের জারি করা রুল রুল ২ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ আদেশ দেন। একইসঙ্গে ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত।
মঙ্গলবার রুল নিষ্পত্তি করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
১৬৯ শিক্ষার্থীর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন রায়ের পর গণমাধ্যমকে বলেন, শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।